পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা - দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ

দাউদের সবচেয়ে ভালো মলমদাদ এমন একটি ব্যাধি যা পুরাতন হয়ে গেলে সহজে ভালো হতে চাই না। দাদ যত বেশি পুরাতন হয় সেটি আরও তত বেশি স্থায়ী হতে থাকে। নতুন পর্যায়ে দাদ এর থেকে পুরাতন দাদ ভালো করতে অনেক বেশি ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়। আপনি যদি আপনার পুরাতন দাদ খুব দ্রুত ভালো করতে চান তাহলে পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা - দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ আর্টিকেলটি পড়ুন। আমরা আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে আপনাদের জন্য তুলে ধরেছি কিভাবে পুরাতন দাদ খুব সহজেই সারিয়ে তুলবেন।
পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা - দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ


পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা - দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ আর্টিকেল এর মধ্যে এমন কিছু অজানা তথ্য রয়েছে যেই সকল তথ্য আপনাদের জন্য অনেক বেশি উপকারী তথ্য হিসাবে কাজে আসবে।

দাদ এর লক্ষণ

দাদ হচ্ছে এক ধরনের সংক্রামক রোগ। যা কোন ব্যক্তির যেকোনো বয়সে হতে পারে। দাদ এমন রোগ যা ছোঁয়াচে পরিবারের একজনের কাছ থেকে ছড়িয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
এটি একজন ব্যক্তির শরীরের যেকোনো অংশেই দেখা দিতে পারে। দাদ কোন এক নির্দিষ্ট সময় দেখা দেয় না কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে শীতের শুরুর দিকে দাদ এর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। দাদ হওয়ার লক্ষণ নিচে আলোচনা করলাম।
  • দাদ গোলাকার ক্ষতের মত প্রথমদিকে দেখা দেয়।
  • সময়ের সাথে সাথে সেই ক্ষত আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে।
  • ক্ষতের স্থানটিতে অনেক বেশি চুলকানি হয়ে থাকে।
  • ক্ষতস্থানটিতে মাঝেমাঝে খুশকির মতো দেখা দেয় আবার মাঝে মাঝে পানি ভর্তি দানাদার এর মত দেখা দেয়।
  • ক্ষতস্থানটি অতিরিক্ত পরিমাণে চুলকানোর কারণে সেই স্থান থেকে পানির ন্যায় রস বের হয়।
  • দাদ যদি মাথার কোন অংশে দেখা দেয় তাহলে সেই অংশের চুল পড়ে যায়।
  • আস্তে আস্তে এক স্থান থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়ে থাকে।

পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা

আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা কি হবে। দাদ এমন একটি রোগ যা সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পাই। আর যত বেশি বৃদ্ধি পায় এর চুলকানি ও বৃদ্ধি পাই। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ার কারণে পরিবারের একজনের দেখা দিলে পরিবারের সকলের হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা হিসেবে চিকিৎসক আপনাদের কিছু ঔষধ লিখে দিতে পারেন সেগুলোর নাম আমরা আপনাদের জানার সুবিধার্থে আলোচনা করলাম।
  1. অ্যাসাইক্লোভির
  2. ভ্যালাসাইক্লোভির
  3. অ্যামিট্রিপটাইলাইন
  4. গ্যাবাপেন্টিন
  5. ক্লোট্রিমাজল
  6. টপিকাল অ্যান্টি ফাংগাল পাউডার
পুরাতন দাদ ভালো করার জন্য উপরোক্ত ঔষধের মধ্যে যেকোনো একটি ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন খুব ভালো ফলাফল পাবেন। আমরা আপনাদের জানার সুবিধার্থে ঔষধের নাম আলোচনা করলাম অবশ্যই তা ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ

কোন ব্যক্তি দাদ রোগে আক্রান্ত হলে যে তাকে নির্দিষ্ট কোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এটি কিন্তু একেবারেই ভুল ধারণা। দাদ রোগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন এমন খাবার নেই যে সকল খাবার আপনাকে একেবারেই খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। 
কিন্তু যেহেতু দাদ হওয়ার কারণে চুলকানি হয় সেহেতু আমাদের পরামর্শ হবে যে যে সকল খাবারে এলার্জি রয়েছে সে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন। কারণ দাদ এ আক্রান্ত হওয়ার পর এলার্জি জাতীয় খাবার খেলে চুলকানি অনেকটাই বেড়ে যাবে। 

এছাড়াও কিছু কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবার আপনাদের এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেবো। এই সকল খাবার গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক বেশি ক্ষতিকারক।

অতিরিক্ত মিষ্টিঃ অনেকে রয়েছেন যারা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে বেশ পছন্দ করেন। যদিও দাদ এর সাথে মিষ্টি খাবারের কোন সম্পর্ক নেই তবুও আমরা পরামর্শ দেবো দাদ এ আক্রান্ত হওয়ার পর মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়ার। কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে দাদ এ আক্রান্ত স্থানটি চুলকানোর কারণে অতিরিক্ত পানি জমা হতে দেখার যেতে পারে।

ভাজাপোড়া খাবারঃ এটি এমন একটি খাবার যে খাবার দেখলে সবার ক্ষেত্রেই লোভ সামলানো একটু মুশকিল হয়ে পড়ে। অবশ্যই এ ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। ভাজাপোড়া খাবার থেকে বিরত থাকলে আমাদের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। হলে দাদ সহ বিভিন্ন রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

প্যাকেজ জাতীয় খাবারঃ আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন রকম প্যাকেজিং খাবার দেখতে পাওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে বিস্কুট, মিষ্টি, চিপস, চকলেট ইত্যাদি। এই ধরনের খাবার দীর্ঘ সময় ভালো রাখার জন্য ব্যবহার করা হয় কার্বোহাইড্রেট। যা আমাদের ত্বকের ক্যান্সার এর জন্য অনেক বেশি দায়ী। তাই অবশ্যই এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।

অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবারঃ আমরা বাঙালি আমাদের কাছে অতিরিক্ত মশলা খাওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। যে কোন খাবারে অতিরিক্ত মশলা ব্যবহার এটিতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু এটি একজন ব্যক্তির শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকারক। বিশেষ করে দাদ এ আক্রান্ত ব্যক্তির।

দাদের ঘরোয়া চিকিৎসা

আমাদের সকলের ঘরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে সকল উপাদান ব্যবহার করে খুব সহজেই আমরা বাসায় বসেই দাদ ভালো করতে পারব। আর একেই বলা হয় ঘরোয়া পদ্ধতি। বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যে সকল ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনারা আপনাদের দাদ ভালো করতে পারবেন।

নারকেল তেলঃ আমাদের ত্বক এবং চুলের যত্নে নারিকেল তেল অনেক বেশি উপকারিতা আমরা সকলেই জানি। তাইতো ত্বকের দাদ এর ক্ষেত্রেও নারকেল তেল অনেকটাই উপকারী। নারিকেল তেলে উপস্থিত রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। 

আর এই ফ্যাটি অ্যাসিড সংক্রমণকে কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই আপনি যদি দাদ এর কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন তাহলে সেই স্থানে তরল নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন এর ফলে চুলকানি এবং ফোলা ভাব থেকে মুক্তি পাবেন।

হলুদঃ হলুদ হচ্ছে এক ধরনের প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদ। যেকোনো ধরনের ব্যথা উপশম করতে ও হলুদ অনেক বেশি কার্যকরী। ঠিক সেইরকম দাদ এর সমস্যা সমাধানের জন্য হলুদ ও অনেক বেশি উপকারী। যতই পুরাতন দাদ হোক না কেন হলুদ ব্যবহার এর মাধ্যমে খুব সহজেই তা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

হলুদের সাথে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার এই পেস্টটি দাদ এর স্থানে লাগান। শুকিয়ে যাওয়ার পর স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন। কিছুদিন এই পেস্ট ব্যবহার করলেই আপনি অনেকটাই পার্থক্য দেখতে পাবেন।

অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল এর রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুণ। যা আমাদের শরীরের দাদের ক্ষতস্থান সারাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই দাদ এর সমস্যা সমাধান করতে চাইলে আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করুন। এতে অনেকটাই পার্থক্য চোখে পড়বে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগারঃ অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে উপস্থিত রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। এই এন্টিফাংগাল উপাদান আমাদের শরীরের কোন ধরনের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়া রোধ করতে সাহায্য করে। 

দাদ এর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে এটি তুলো অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এ ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে মুছে নিতে হবে। কিছু দিনেই খুব ভালো ফলাফল লক্ষ্য করা যাবে।

নিম পাতার রসঃ নিম পাতার রস এর রয়েছে যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া কিংবা জীবাণু মেরে ফেলার বিশেষ গুনাগুণ। আর তাইতো যে কোন ধরনের জীবাণু দূর করতে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে নিম পাতার রস। 

দাদ এই আক্রান্ত স্থানটি প্রতিদিন নিম পাতার রস দিয়ে পরিষ্কার করে মুছে নিতে হবে কিংবা ধুয়ে নিতে হবে। এতে করে দাদ থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যাবে।

ঘরোয়া পদ্ধতি প্রয়োগের পাশাপাশি বেশ কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো মেনে চলতে হবে:
  • আক্রান্ত স্থানটি অবশ্যই সব সময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • আক্রান্ত স্থানটি স্পর্শ করার পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কারভাবে ধুতে হবে।
  • দৈনন্দিন ব্যবহৃত কাপড়,তোয়ালে এবং বিছানার চাদর ফুটন্ত গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
  • আক্রান্ত স্থানটিতে সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • আক্রান্ত স্থানটি নখ দিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

দাদ হলে কি সাবান ব্যবহার করা যায়

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে দাদ হলে কি সাবান ব্যবহার করা যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা বলব যে দাদ আক্রান্ত স্থানটিতে সাবান ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ সাবানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এক ধরনের পদার্থ যাকে বলা হয় ক্ষার। 

আর এই ক্ষার যখন দাদ এ ব্যবহার করা হয় তখন সেই স্থানটির অনেক বেশি অবনতি হতে পারে অর্থাৎ দাদ বেড়ে যেতে পারে। তাইতো বিভিন্ন চিকিৎসকগণ দাদ এর উপর কোনরকম সাবান ব্যবহার করতে নিষেধ করেন। 

কিন্তু বাজারে বেশ কিছু সাবান রয়েছে যে সকল সাবান আপনারা নিঃসন্দেহে ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ সেই সকল সাবান দাদ এর উপর ব্যবহার করা যায়। সেহেতু যদি কোন সাবান ব্যবহার করতে চান তাহলে প্রথমে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী সাবান ব্যবহার করুন।

পরামর্শমূলক কিছু কথা

আমরা এতক্ষণ আপনাদের সামনে পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা - দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ আর্টিকেল দ্বারা দাদ সম্পর্কে বিভিন্ন জানা এবং অজানা তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা দাদ সম্পর্কে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং আপনারা সেই তথ্য দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। 

দাদ যেহেতু এক ধরনের ছোঁয়াচে রোগ সেহেতু অবশ্যই আক্রান্ত হলে অনেক বেশি সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে যেন পরিবারের অন্য সদস্য এ রোগে আক্রান্ত না হয়। এরকম আরও প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে আসতে পারেন।

''ধন্যবাদ''

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url