কীটনাশক ঔষধের নাম সম্পর্কে জেনে নিন

লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগের প্রতিকারআজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলটি কীটনাশক ঔষধের নাম দ্বারা সাজিয়েছি। আপনারা আর্টিকেলটি পড়লে বিভিন্ন রকম কীটনাশক ঔষধের নাম এর সাথে পরিচিত হবেন। এছাড়াও আমাদের আর্টিকেল কীটনাশক ঔষধের নাম পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন কোন কীটনাশক কিভাবে ব্যবহার করবেন। আমরা আমাদের আর্টিকেলে কীটনাশক ঔষধ সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছি।
কীটনাশক ঔষধের নাম

কীটনাশক সম্পর্কে বিভিন্ন রকম জানা-অজানা তথ্য পেতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

ভূমিকাঃ কীটনাশক ঔষধের নাম

সময় যত পার হচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে যে যে কোন চাষাবাদ করার ক্ষেত্রে কোন রকম কীটনাশক ব্যবহার না করলে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন রকম পোকামাকড়ের কারণে সময়ের পূর্বেই ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 
আর সেই কারণে কৃষকদের বাধ্য হয়েই বিভিন্ন রকম এবং বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হচ্ছে। ফসলের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার সমাধান করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন রকম কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। যদি ফসলে কীটনাশক ব্যবহার না করা হয় তাহলে চাষী ক্ষতির সম্মুখীন হয়। 

আর সেই কারণেই কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহারের চাহিদা ব্যবহারে বেড়েই চলেছে। আর তাইতো আমরা আমাদের আর্টিকেল দ্বারা আপনাদের কে সেই সকল কীটনাশকের নাম এবং কীটনাশকের ব্যবহার জানানোর চেষ্টা করেছি। আসুন একসাথেই জানি কীটনাশক ঔষধের নাম এবং তার ব্যবহার বিধি।

কীটনাশক ঔষধের নাম

আমাদের বেশ কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশে বিভিন্ন রকম ফসল উৎপাদিত হয়। আর সেই সকল ফসল ভালোভাবে ফলানোর জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন রকম কীটনাশক ঔষধ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের দেশের কৃষকেরা শিক্ষিত নয়। 
আর সেই কারণে তারা সব ধরনের কীটনাশক ঔষধের নাম এবং সেই সকল ঔষধের ব্যবহার কিভাবে করতে হয় তা না পড়েই কারো মুখ থেকে শুনে ব্যবহার করে। আর এই কারণে অনেক সময় ক্ষতি ও হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষিত মানুষ কৃষিকাজের দিকে ঝোঁক বাড়িয়েছে। কিন্তু দেখা যায় যে তারা অনেকেই সব ধরনের কীটনাশক ঔষধের নাম সম্পর্কে জানেনা। 

আর সেই কারণেই তো আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে কীটনাশক ঔষধের নাম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। যাতে করে আপনারা সব ধরনের কীটনাশক ওষধের সাথে পরিচিত হতে পারেন। এখন জেনে নিন বিভিন্ন রকম কীটনাশক ঔষধের নামঃ
  • বাদা ১০ কেজি
  • ফানা ৫ কেজি
  • বাতির ৯৫ এসপি
  • জাফ ২০ এসপি
  • দামদামা ৪৪০ ইসি
  • কাছির ৪৮ ইসি
  • সাওতা ৫৭%
  • তাজরী ৫০ এসপি
  • তুবার ৬০ ইসি
  • ফানা ৫ জি
  • হারবা ৪৫ এসসি
  • আকিল ২৩ ডব্লিউডিজি
  • লাকাদ ১.৮ ইসি
  • হিমাম ৫০ ডব্লিউডিজি
  • লাবিব ৩৮ ডব্লিউডিজি
  • সাহির ৫৪ এসজি
  • জুবাস ২.৫ ইসি
  • সাবা ৮০ডব্লিউডিজি
  • লাহিব ৩৮ ডব্লিউডিজি
  • দামার ৬০ ডব্লিউডিজি
  • দামদামা গোল্ড ৪৪ ইসি
  • নেমা ৫০ এসসি
  • জামির ২০ ইসি
  • সাহাম ৫ এসজি
  • জাহিম ৫৫ ইসি
  • জুবাস - ডি ৫ ইসি
  • বুরুজ ২৫ ডব্লিউডিজি
  • লামাহ ২৫ ডব্লিউপি
  • তাকাত ২৪.৭ এসসি
  • জাদীদ ২০০ এসএল
  • জহর ৩ জিআর
  • শেফা ১০ ইসি
আমরা এতক্ষন আপনাদের সামনে বেশ কিছু কীটনাশক ঔষধের নাম আলোচনা করেছি। এই সকল কীটনাশক ঔষধ কিভাবে ব্যবহার করতে হয় আমরা আমাদের আর্টিকেলের নিচের অংশে তা সুস্পষ্টভাবে আলোচনা করেছি। 
আপনারা যদি জানতে চান কিভাবে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে তাহলে নিচের অংশ পড়ুন। তাহলে বুঝতে পারবেন আপনারা কোন কীটনাশক কিভাবে ব্যবহার করবেন।

কীটনাশকের গ্রুপের নাম

আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব বিভিন্ন গ্রুপের কীটনাশকের সাথে। তার পাশাপাশি আপনাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপের কীটনাশকের কাজ কি সেইগুলো সম্পর্কে জানাবো। আশা করছি আপনারা এই অংশটি পড়লে কীটনাশক গ্রুপের সম্পর্কে বিভিন্ন রকম অজানা তথ্য জানতে পারবেন। একসাথে জেনে নেই কীটনাশকের গ্রুপের নাম।

Imidacloprid 17% SL - এই কীটনাশককে বলা হয়ে থাকে এক ধরনের সিস্টেমিক কীটনাশক। এই কীটনাশক জমির বিভিন্ন ধরনের শোষক পোকা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। শোষক পোকার মধ্যে হচ্ছেঃ থ্রিপস,জাব পোকা,সাদা মাছি,এফিড ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 

এই ধরনের পোকার উপদ্রব কমাতে Imidacloprid 17% SL গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। এই গ্রুপের বাজারজাতকরণ নাম হচ্ছে ঃ এরোপিড, কৃষক বন্ধু, পাওয়ার সান ইত্যাদি আরো বেশ কিছু নাম রয়েছে।

Imidacloprid 17% SL এর ব্যবহারঃ বেগুনের পাতাপুকুরে যাওয়া, মরিচের গাছে সাদা মাছির সমস্যা সমাধানের জন্য এই কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও আলুর গাছের জাব পোকার উপদ্রব কমানোর জন্য এবং পটলের গাছের জাব পোকার উপদ্রব কমানোর জন্য নিঃসন্দেহে এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। 

কলার গাছ, ঢেঁড়সের গাছ কিংবা লাউ ও কুমড়োর শোষক পোকা দমন করতে এই কীটনাশক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই কীটনাশক ব্যবহার করার নিয়ম হচ্ছে প্রতি লিটার জলে ১ মিলি দিতে হবে।

Propargite 57% - অনেক সময় দেখা যায় যে জমিতে প্রচুর পরিমাণ মাকড় এর সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনারা এই কীটনাশক মাকড় নাশক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই কীটনাশক এর বাজারে যেগুলো নাম তা হচ্ছেঃ Miti-kill,Omite ইত্যাদি।

Propargite 57% এর ব্যবহারঃ যে কোন গাছের মাকড় এর সমস্যা সমাধান করতে এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারবেন। এই কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ম হচ্ছে প্রতি লিটার পানির সাথে ২.৫ মিলি যোগ করতে হবে।

Cypermethrin 25% EC - এটি এমন এক ধরনের কীটনাশক ঔষধ যদি কোন পোকা মাকড়ের গায়ে লাগে তাহলে সেই পোকামাকড় মারা যাবে। বিভিন্ন ধরনের পোকামাক রয়েছে যে সকল পোকামাকড় এর ডানা রয়েছে। 

আর সেই সকল পোকামাকড় উড়ে উড়ে এক ফসল থেকে আরেক ফসলে গিয়ে ফসল নষ্ট করে। সেই সকল পোকা মাকড়ের ক্ষেত্রে এটি খুব ভালো একটি কীটনাশক। Cypermethrin এর বাজারজাতকরণ নাম হচ্ছে শানমেরিন,সাইপেরিন,কট শেফা,ফেনকর্ড ইত্যাদি।

Cypermethrin 25% EC এর ব্যবহারঃ যেকোনো ধরনের ফল ছিদ্রকারী পোকার প্রতিরোধ আটকাতে এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। এর পাশাপাশি বেগুন গাছের জাব পোকা এবং লাউ ও মিষ্টি কুমড়ার গাছের মাছি পোকা, আম গাছের হপার পোকা, পাটের বিছে পোকা এই সকল ক্ষেত্রেও Cypermethrin গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। Cypermethrin 25% প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি ব্যবহার করতে হবে।

Dicofoln18.5% EC - এটিও এক ধরনের মাকড় নাশক কীটনাশক। এছাড়াও এই কীটনাশক স্পেশালি মাইটস নামেও পরিচিত। যে কোন গাছের মাকড় এর সমস্যা সমাধানের জন্য এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারবেন। এই কীটনাশক বাজারে Rusfol,Aalmit,Difol নামে পরিচিত।

Dicofoln18.5% EC এর ব্যবহারঃ এই কীটনাশক ব্যবহারের পদ্ধতি হচ্ছে আপনারা প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ করে যোগ করতে হবে। যেকোনো গাছের মাকড় এর সমস্যা সমাধান করতে আপনারা এই গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন।

Dimethoate 30% EC - Dimethoate 30% EC কোম্পানির কীটনাশক জাব পোকা,শোষক পোকা, সাদা মাছি নিরসন করতে ব্যবহার করতে পারবেন। Dimethoate 30% EC একটি বেশ পরিচিত এবং স্বল্পমূল্যের কীটনাশক। অনেক বেশি প্রচলিত হওয়ায় অনেকেই এই গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন।

Dimethoate 30% EC এর ব্যবহারঃ Dimethoate 30% EC কীটনাশক ঔষধ প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ব্যবহার করতে হবে। এর পাশাপাশি মনে রাখতে হবে যে একবার এটি ব্যবহার করার পর 10 থেকে 12 দিন পর পুনরায় আবার ব্যবহার করতে হবে। যদি পরপর দুইবার জমিতে প্রয়োগ করেন তাহলে জমিতে যেকোনো ধরনের পোকামাকড়ের সমস্যা একেবারেই সমাধান হয়ে যাবে।

Monocrotophos 36% - এই গ্রুপের কীটনাশক জমির মিলি বাগ, হপার পোকা, ফলের মাছি, সাদা মাছি, ফল ছিদ্রকারী পোকা,শোষক পোকা এবং জাব পোকা নিরসন করতে অনেক বেশি কার্যকরী। যদি জমিতে এই ধরনের পোকার উপদ্রব হয় তাহলে আপনারা Monocrotophos 36% গ্রুপের কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে পারবেন। অনেক ভালো ফলাফল দেবে।

Monocrotophos 36% এর ব্যবহারঃ এই গ্রুপের কীটনাশক ঔষধ প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি ঔষধ মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এই কোম্পানির বাজারজাতকরণ নাম হচ্ছেঃ Monophos,Monorin,Monokill ইত্যাদি।

শেষ কথাঃ কীটনাশক ঔষধের নাম

আশা করছি আপনারা কীটনাশক ঔষধের নাম আর্টিকেলটি পড়ে কীটনাশক ঔষধ সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। কীটনাশক ঔষধের নাম কি কি? তার সাথে পরিচিত হয়েছেন। এছাড়াও জানতে পেরেছেন যে কোন গ্রুপের কোম্পানির কীটনাশকের নাম কি এবং তার ব্যবহার কিভাবে করতে হয়। 

আমাদের আর্টিকেলে আমরা শুধুমাত্র আপনাদের সামনে কীটনাশক ঔষধের ছোট কিছু ধারণা তুলে ধরেছি। আপনারা যদি কীটনাশক সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। এছাড়াও আপনাদের কোন প্রশ্ন এবং মতামত থাকলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।

''ধন্যবাদ''

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url