কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে বোঝার সবথেকে সহজ উপায় জানুন

লিভার সিরোসিস রোগী কত দিন বাঁচেআজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে আপনাদের জানার সুবিধার্থে কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের আর্টিকেল কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে এর মাঝে আমরা হারভাঙ্গা সম্পর্কে বিভিন্ন রকম তথ্য তুলে ধরেছি। আপনারা আমাদের আর্টিকেলটি কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে পড়ে খুব সহজে বুঝতে পারবেন যে কোন খাবার খাওয়ার কারণে আপনার হাড় দ্রুত জোড়া লাগবে এবং হাড় ভাঙ্গার পর প্রাথমিক চিকিৎসা কি।
কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে

আমরা আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিয়েছে যা দ্বারা আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

হাড়ভাঙ্গা / বোন ফ্র্যাকচার কি?

হাড়ভাঙ্গা বলতে সাধারণত আমাদের শরীরের হাড়ের অস্বাভাবিক অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে। যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয়ে থাকে কন্টিনিউটি তে ছেদ পড়া। আমাদের শরীরের হাড় বেশ কিছু স্তর দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। যেমন প্রথমেই থাকে এক ধরনের পর্দা তারপরে থাকে কর্টিকাল বোন আর এই বোনের ভেতরে থাকে মজ্জা। 

আর কোন কারনে যদি এই হাড়ে ফাটল হয় অথবা চির ধরে তখন তাকে বলা হয়ে থাকে হাড় ভাঙ্গা। একজন মানুষের বিভিন্ন রকম ভাবে হাড় ভাঙ্গতে পারে। প্রথমত হচ্ছে কমপ্লিট ফ্র্যাকচার তার মানে হচ্ছে হার পুরোপুরি ভেঙে যাওয়া আর দ্বিতীয়ত হচ্ছে ইনকমপ্লিট ফ্র্যাকচার যার মানে হচ্ছে হাড়ের কিছু অংশ ভেঙে যাওয়া। 

আরেক ধরনের মানুষের শরীরে হাড়ভাঙ্গা দেখা যায় যাকে বলা হয়ে থাকে ক্লোজ ফ্র্যাকচার এই হাড় ভাঙ্গার পদ্ধতি হচ্ছে শরীরের উপরের অংশ ঠিকঠাক থাকে কিন্তু ভেতরে শুধুমাত্র হাড় ভেঙ্গে যায়। মানুষের শরীরে আরো একধরনের ফ্র্যাকচার অথবা হাড় ভেঙে থাকে যাকে বলা হয়ে থাকে ওপেন ফ্র্যাকচার। 

এ অবস্থাতে হার পুরোপুরি ভেঙে ত্বকের উপর দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। আরেক ধরনের হাড়ভাঙ্গা হচ্ছে ডিসপ্লেস ফ্র্যাকচার। এই পদ্ধতিতে হাড় ভাঙলে হাড়ের অংশ টুকরো হয়ে দুই ভাগে আলাদা হয়ে যাই।

হাড় ভাঙ্গার কারণ কি

একটি মানুষের শরীরের হাড় ভাঙার বিভিন্ন রকম কারণ থাকতে পারে। আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশের শরীরের হাড় ভাঙ্গার কয়েকটি কারণ আপনাদের সামনে চেষ্টা করব। আসুন তাহলে জেনে নেই হাড় ভাঙ্গার কারণ গুলো কি কিঃ

পুষ্টির অভাবঃ একজন মানুষের শরীরের হাড় ভাঙ্গার একটি প্রধান কারণ হচ্ছে পুষ্টির অভাব। যখন কোন মানুষের শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয় অর্থাৎ ক্যালসিয়াম কিংবা ভিটামিন এ ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এর ঘাটতি দেখা দিলে আমাদের শরীরের হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। যার ফলে হাড়ে চির অথবা ফাটল দেখা দিতে পারে।

সংক্রমণের কারণেঃ কিছু কিছু সংক্রমণ রয়েছে যেমন অস্টিওমাইলাইটিস আমাদের শরীর যদি এই সংক্রমণে ক্ষান্ত হয় তাহলে আমাদের শরীরের হাড় ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সংক্রমণ আমাদের শরীরের হাড় অনেক বেশি দুর্বল করে।

শারীরিক চাপের কারণেঃ আমাদের সকলের শরীরের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভারী মালপত্র উঠানোর শক্তি থাকে। আমরা যদি আমাদের শরীরের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের চাইতে বেশি ভারী মালপত্র উঠানো এবং নামানো পড়ে থাকি তাহলে একসময় আমাদের হাড়ের উপর অতিরিক্ত চাপ পরে যার ফলে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দুর্ঘটনার কারণেঃ আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। কখনো ছোট দুর্ঘটনা আবার কখনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আর এই দুর্ঘটনা জনিত কারণেও অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে।

ঔষধের সাইড ইফেক্টঃ কিছু ঔষধ রয়েছে যেই সকল ঔষধ আমাদের শরীরের হাড়কে দুর্বল করে দিতে পারে যেমন স্টেরয়েড। এই ঔষধ কোন মানুষ দীর্ঘদিন যাবত খাওয়ার কারণে তার হাড় দুর্বল হয়ে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

বয়সের পরিবর্তনঃ সময়ের সাথে সাথে আমাদের বয়সের পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক। সময় যত যেতে থাকে আমাদের বয়স কত বৃদ্ধি পায়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের শরীরের হাড়ের ঘনত্ব করতে শুরু করে। তাই একসময় যখন বয়স অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন খুব সহজেই হাড় ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

জেনেটিক কারণেঃ কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের জন্মগতভাবেই হাড় অনেক বেশি দুর্বল থাকে। আর তাদের হাড় স্বাভাবিকের চেয়ে দুর্বল হওয়ার কারণে খুব সহজেই যে কোন আঘাতে ফাটল ধরতে পারে অথবা ভেঙে যেতে পারে।

হাড়ের বিভিন্ন রকম রোগের কারণেঃ কিছু কিছু রোগ রয়েছে যে সকল রোগ আমাদের হাড়কে অনেক বেশি দুর্বল করে ফেলে। যেমনঃ রিকেটস, প্যাজেটস অথবা হাড়ের ক্যান্সার। এই সকল রোগের কারণে ব্যক্তির শরীরের হাড় অনেক বেশি দুর্বল হয় এবং খুব সহজেই ভেঙে যেতে পারে।

আশা করছি আপনারা উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন যে একজন মানুষের শরীরের হাড় ভাঙ্গার কারণ কি কি হতে পারে।

হাড় ভাঙ্গার পর প্রাথমিক চিকিৎসা

কোন ব্যক্তির হাড় ভাঙ্গার পর যদি সঠিক সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করা যায় তাহলে ক্ষতি হওয়ার পরিমাণ কিছুটা কম হতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসা অনেক সময় যেকোনো ক্ষতের উপর মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে। তাই অবশ্যই যদি কোন ব্যক্তির হাড় ভাঙ্গে তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। হাড় ভাঙ্গার পরে নিম্নে উল্লেখিত প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো গ্রহণ করতে পারেন।
  • হাড় ভাঙ্গার ব্যক্তির অবস্থা কেমন ঠিকঠাক জ্ঞান আছে কিনা এবং ঠিকঠাকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারছে কিনা সেদিকে খেয়াল করতে হবে।
  • যে স্থানের হার ভেঙ্গে যাবে সেই স্থান বেশি নড়াচড়া করানো যাবে না। এক জায়গায় স্থির রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • ভাঙ্গা স্থানে বরফ অথবা ঠান্ডা পানি প্রয়োগ করতে হবে। অনেক সময় ঠান্ডা পানি দেওয়ার ফলে ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
  • ভাঙ্গা হাড়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে ব্যথা হতে পারে তাই অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথা নাশক ঔষধ দিতে হবে।
  • ভাঙ্গা হাড়ের স্থান হতে যদি রক্তপাত ঘটে তাহলে অবশ্যই সেখান থেকে রক্ত পাত হওয়া বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনারা পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে স্থানটি চেপে ধরতে পারেন।
  • ভাঙ্গা স্থান এর উপর যেন কোনরকম চাপ না পরে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • যত দ্রুত সম্ভব ব্যক্তিকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

কি খেলে হাড় জোড়া লাগে

এমন কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবার হাড় দ্রুত জোড়া লাগতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে। তাই যদি কোন ব্যক্তির শরীরের কোন অংশের হাড় ভেঙ্গে যায় তাহলে চিকিৎসার পাশাপাশি সেই সকল খাবার খেলে ভাঙ্গা হাড়টি দ্রুত জোড়া লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

আমাদের শরীরের হার এমন একটি অংশ যে নির্দিষ্ট সময়ে নিজে থেকেই জোড়া লেগে যায়। কিন্তু কিছু কিছু খাবার সেই স্থানটিকে দ্রুত জোড়া লাগতে সাহায্য করে। জেনে নিন কি খেলে হাড় জোড়া লাগে।

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারঃ যে সকল খাবারে ভিটামিন ডি রয়েছে সে সকল খাবার আমাদের ভাঙ্গা হাড়কে দ্রুত জোড়া লাগতে অনেক বেশি সাহায্য করে। 

কারণ ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগাতে ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। যেমনঃ টুনা মাছ,স্যামন মাছ, ডিমের কুসুম, দুধ ইত্যাদি।

ভিটামিন কে জাতীয় খাবারঃ ভিটামিন কে আমাদের শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে শরীরের ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগে। শরীরের কোন অংশ ভেঙ্গে গেলে প্রতিদিন ভিটামিন কে জাতীয় খাবার খান। যেমনঃ কুমড়ার বীজ, ব্রকলি, পালং শাক ইত্যাদি।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবারঃ শরীরের ভাঙ্গা অংশের হাড় দ্রুত জোড়া লাগাতে চান তাহলে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খান। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে কোলাজেন তৈরি করে যার ফলে আমাদের হাড় অনেক বেশি মজবুত হয়। 

এছাড়াও আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার হচ্ছে লেবু, কমলা, কাজী পেয়ারা, সীমের বিচি, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবারঃ যে সকল খাবার ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে সে সকল খাবার আমাদের ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই নিঃসন্দেহে ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগাতে চাইলে ওমেগা ৩ব ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবার খেতে পারেন। যে সকল খাবারে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে তা হচ্ছে আখরোট,স্যালমন মাছ, সিয়া বীজ ইত্যাদি।

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ আমাদের হারের জন্য ক্যালসিয়াম কতটা উপকারী সেই বিষয়ে আমরা সকলেই জানি। হাড় শক্ত করতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ক্যালসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগতে এটি অনেক বেশি সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার গুলো হচ্ছে - দুধ, ব্রকলি, পনির, পালং শাক, দই ইত্যাদি।

প্রোটিন জাতীয় খাবারঃ প্রোটিন আমাদের শরীরের হাড়ের টিস্যু পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে। যা আমাদের হাড়ের জন্য অনেক বেশি উপকারী। যে সকল খাবারে প্রোটিন রয়েছে সে সকল খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। যেমনঃ ডাল, মুরগির মাংস, বাদাম, ডিম, গরুর মাংস ইত্যাদি।

ফসফরাস জাতীয় খাবারঃ কিছু কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস উপস্থিত থাকে। আর ফসফরাস আমাদের হাড়ের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এটি আমাদের হাড়ের গঠনে সহায়তা করে। যে সকল খাবারে ফসফরাস উপস্থিত রয়েছে তা হচ্ছেঃ মাছ, ডাল, মটরশুটি, বাদাম ইত্যাদি।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবারঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের হাড়ের জন্য কতটা উপকারী তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার আমাদের হাড়কে পুনরুদ্ধান করে এবং বিভিন্ন রকম প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। 

তাই যে সকল খাবারে এন্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিত হয়েছে সে সকল খাবার খেতে পারেন। যেমনঃ গ্রিন টি, বেরি, চেরি ইত্যাদি।

ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবারঃ ম্যাগনেসিয়াম আমাদের হাড়ের গঠনে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই যদি ভাঙ্গা হার খুব দ্রুত জোড়া লাগাতে চান প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ম্যাগনেসিয়াম উপস্থিত রয়েছে এমন খাবার রাখুন। যেমনঃ বাদাম, বীজ, পালং শাক, কলা ইত্যাদি।

কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে

অনেক সময় ভাঙ্গা হাড়ের চিকিৎসা করার পর আমাদের মনে সন্দেহ জাগে আসলেই কি ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগছে? সঠিক চিকিৎসা কি হচ্ছে? অনেকের মনেই এরকম প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে থাকে। একজন ব্যক্তির যখন ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগে তখন বেশ কিছু লক্ষণ দেখেই বোঝা যায় যে ব্যক্তিটির ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগছে। সে সকল লক্ষণ যদি আপনার মধ্যে প্রকাশ পায় তাহলে বুঝবেন আপনার ভাঙ্গা হাড়টি ধীরে ধীরে জোড়া লাগছে। আপনাদের সেই সকল প্রশ্নের উত্তর হিসেবে আমরা এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরব কোন লক্ষণ দেখে আপনার ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগছে।
  • ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগার প্রথম লক্ষণ হচ্ছে ভাঙ্গা স্থানের ব্যথা আস্তে আস্তে কমতে শুরু করবে। যদি ভাঙ্গা স্থানের ব্যথা কমতে শুরু করে তাহলে বুঝতে হবে সেই স্থানের পুনর্গঠন শুরু হয়ে গেছে।
  • ভাঙ্গা স্থানের ফোলা ভাব থাকলে সেই ফোলা ভাব কমতে শুরু করবে।
  • ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে শুরু করলে আপনারা সেই স্থানটি আস্তে আস্তে নড়াচড়া করতে পারবেন। নড়াচড়া করার সময় খুব একটা ব্যথা অনুভব হবে না।
  • ভাঙ্গা হাড়ের ফিজিওথেরাপি করার সময় যদি আপনার অস্বস্তি কমে আসে তাহলে বুঝতে হবে আপনার ভাঙ্গা হাড়টি জোড়া লাগা শুরু হয়েছে।
  • চিকিৎসা করানোর পর এক্সরে অথবা অন্যান্য টেস্ট করে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন যে হাড় সঠিকভাবে জোড়া লাগছে কিনা।
ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগানোর চিকিৎসা করার পর যদি উপরোক্ত লক্ষণগুলো আপনার ভেতর প্রকাশ না পাই কিংবা ভাঙ্গা স্থানের ব্যাখ্যা বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে যে আপনার ভাঙ্গা স্থানটি জোড়া লাগেনি। 

তাই চিকিৎসকের নিকট গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে। সঠিক সময়ে যদি সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ না করেন তাহলে সেটি আপনার জন্য দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই অবশ্যই এক্ষেত্রে কোনরকম অবহেলা করা যাবে না।

ফাটাহাড় জোড়া লাগতে কতদিন সময় লাগে

ফাটা হাড় জোড়া লাগতে কতদিন সময় লাগবে সেটি নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। ফটাহাড় কতদিনে জোড়া লাগবে তা নির্ভর করবে আপনার কোন স্থান ভেঙেছে অথবা আপনার বয়স কেমন কিংবা আপনার শরীরের পুষ্টি কেমন উপস্থিত রয়েছে আরও বিভিন্ন বিষয়ের উপর।
ফাটাহাড় জোড়া লাগতে সময় লাগেঃ
  1. প্রাথমিক ক্ষেত্রে ৬ সপ্তাহর পর থেকেই ভাঙা অংশটি জোড়া লাগতে শুরু করবে।
  2. এটির সময় যখন ৬ থেকে ১২ সপ্তাহ পার হয় তখন সম্পূর্ণভাবে জোড়া লাগে।
  3. কারো কারো ক্ষেত্রে একেবারেই সুস্থ হতে সময় লাগে তিন থেকে ছয় মাস।
আপনার ভাঙ্গা হাড় কত তাড়াতাড়ি জোড়া লাগবে তা নির্ভর করে কিছু বিষয়ের উপর। আমরা এখন সেই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যেমনঃ
  • ভাঙ্গা স্থানটি যদি অল্প পরিমাণে সরল ভাঙ্গন হয় তাহলে তা দ্রুত সরে ওঠে কিন্তু যদি ভাঙ্গা স্থানটি চূর্ণ হয় অথবা জটিল ভাঙ্গন হয় তাহলে সেটি সেরে উঠতে সময় বেশি প্রয়োজন হয়।
  • কোন স্থানে ভাঙ্গন হয়েছে সেটির উপরেও নির্ভর করে ভাঙ্গা স্থান কত তাড়াতাড়ি ঠিক হবে। যেমন উরুর হার ভাঙ্গলে সেটি জোড়া লাগতে সময় একটু বেশি লাগে কিন্তু পায়ের নিচের হাড় ভাঙ্গলে সেই ভাঙ্গায় স্থান জোড়া লাগতে সময় কম লাগে।
  • ভাঙ্গা হাড় কত তাড়াতাড়ি জোড়া লাগবে সেটি অনেক সময় বয়সের উপরেও নির্ভর করে। বয়স কম হলে ভাঙ্গা হাড় দ্রুত জোড়া লাগে আর বয়স বেশি হলে জোড়া লাগতে একটু সময় বেশি লাগে।
  • কারো শরীরে পুষ্টির অভাব থাকলে তার ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে একটু সময় বেশি লাগবে আর যদি তার শরীরে পুষ্টি সঠিক পরিমাণে উপস্থিত থাকে তাহলে শরীরের ভাঙ্গা হাড় দ্রুত ঠিক হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • ভাঙ্গা হাড় কত তাড়াতাড়ি জোড়া লাগবে এটি অনেকটা নির্ভর করে তার চিকিৎসার ওপর। সঠিক চিকিৎসা হলে দ্রুত জোড়া লাগবে আর যদি সঠিক চিকিৎসা না পায় তাহলে জোড়া লাগতে সময় প্রয়োজন হবে।
  • ভাঙ্গা হাড়ের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যদি ফিজিওথেরাপি নিয়মিতভাবে নেওয়া হয় তাহলে সেই স্থান দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • যদি কোন ব্যক্তি অতিরিক্ত ধূমপান অথবা অ্যালকোহল পান করেন তাহলে তার ক্ষেত্রে ভাঙ্গা স্থান জোড়া লাগতে সময় বেশি প্রয়োজন হবে।

হাড় জোড়া লাগার পর করনীয়

কোন স্থানের হাড় ভেঙ্গে গেলে চিকিৎসা করানোর পর হাড় যদি জোড়া লাগতে শুরু করে তাহলেই আপনার আর কিছু করার নেই যদি এমনটা ভাবেন তাহলে এটি আপনাদের একেবারে ভুল ধারণা। কারণ কিছু করণীয় রয়েছে যে সকল করণীয় অবশ্যই আপনাকে হাড় জোড়া লাগার পর মেনে চলতে হবে। 

যদি সে সকল করণীয় গুলো না মেনে চলেন তাহলে বিভিন্ন রকম সমস্যা অথবা পুনরায় আপনার ভাঙ্গা হাড়ের ক্ষতি হতে পারে। এখন জেনে নিন হাড় জোড়া লাগার পর করণীয়গুলো কি কি।
  • হাড় জোড়া লাগার পর অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম নিতে হবে। যতক্ষণ না আপনার হাড় শক্তিশালী হয় ততদিন পর্যন্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
  • নিয়ম অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন রকম অবহেলা করা যাবে না।
  • হাড়জোড়া লাগার পর আস্তে আস্তে চলাফেরা শুরু করতে হবে এবং কোন রকম ভারী কাজ অথবা ভারি এক্সারসাইজ করা যাবে না।
  • বিভিন্ন রকম পুষ্টিকর খাবার যে সকল খাবার আপনার ভাঙ্গা হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় সে সকল খাবার গুলো খেতে হবে।
  • চিকিৎসক যে সকল ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সেই সকল ঔষধ নিয়ম করে খেতে হবে।
  • ধূমপান এবং অ্যালকোহল যদি খান তাহলে তা খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। এটি আপনাদের হাড়েড় জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকারক হিসেবে কাজ করবে।
  • ভাঙ্গা স্থানে যেন কোনরকম ভাবে আঘাত না পাই সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ভাঙ্গা স্থান যদি পা হয় তাহলে হাঁটাচলা করার ক্ষেত্রে সাহায্যকারী হিসেবে কোন কিছু ব্যবহার করতে হবে।

শেষ কথাঃ কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে

আশা করছি আপনারা আমাদের লেখা আর্টিকেল কিভাবে বুঝব হাড় জোড়া লাগছে দ্বারা বুঝতে পেরেছেন আপনাদের শরীরের কোন অংশ ভেঙে গেলে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং কোন কোন খাবারগুলো খাবেন। তাছাড়া ভাঙ্গা স্থান জোড়া লাগার পর আপনাদের করণীয়গুলো কি কি হবে। 

আমরা আপনাদের জানার সুবিধার্থে বিভিন্ন রকম তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে পেয়েছেন। আপনাদের এ বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা আপনাদের দ্রুত উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url