বেনাইন টিউমার চেনার উপায় যা দ্বারা খুব সহজেই জিনতে পারবেন
টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে জানুনআজকে আমরা যে বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখেছি তা হচ্ছে বেনাইন টিউমার চেনার উপায়।
আমরা আমাদের আর্টিকেল বেনাইন টিউমার চেনার উপায় দ্বারা আপনাদের সামনে বিনাইন
টিউমার সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরেছি। আমরা আলোচনা করেছি বেনাইন টিউমার কেন হয়
এবং বিনাইন টিউমারের লক্ষণ কি।
আশা করছি আপনারা আমাদের আর্টিকেল বেনাইন টিউমার চেনার উপায় পড়লে বিনাইন টিউমার
সম্পর্কে খুঁটিনাটি সকল তথ্য জানতে পারবেন।
ভূমিকাঃ বেনাইন টিউমার চেনার উপায়
আমাদের আশেপাশে অনেকেই রয়েছেন যাদের টিউমার হয়ে থাকে। টিউমার এমন একটি ব্যাধি
যা হওয়ার সাথে সাথেই লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অনেক ক্ষেত্রে টিউমার হওয়ার লক্ষণ
প্রকাশ পায় অনেক দেরিতে। কিছু কিছু টিউমার রয়েছে যে সকল টিউমার নিয়ে সুস্থ
ভাবে জীবন যাপন করা যায়।
মানে সে সকল টিউমার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু কিছু কিছু টিউমার
এর শেষ পরিনিতি হয়ে দাঁড়ায় ক্যান্সার। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি
ক্ষতিকারক। মানুষের শরীরে যে সকল টিউমার দেখা যায় তা হচ্ছেঃ
- বেনাইন টিউমার
- ম্যালিগন্যান্ট টিউমার
- সর্কোমা
- কারসিনোমা
- লিউকেমিয়
উপরে উল্লেখিত টিউমার গুলো একজন মানুষের শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়ে থাকে।
কোন কোন টিউমার আমাদের শরীরের জন্য হয় ভয়ংকর ক্ষতিকারক আবার কোন কোন টিউমার
আমাদের শরীরে থাকলেও কোন সমস্যা দেখা যায় না।
বিনাইন টিউমার কি
বিনাইন টিউমার টিউমারের একটি ধরন। এই ধরনের টিউমার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক
নয়। বিনাইন টিউমার একটি আবরণ দ্বারা বেষ্টিত থাকে এবং ধীরে ধীরে এ ধরনের টিউমার
বৃদ্ধি পায়। বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়াই না।
এই টিউমার যেই স্থানে হয় সেই স্থানেই অবস্থিত থাকে। বিনাইন টিউমার অস্ত্রপাচারের
মাধ্যমে ভালো হয়ে থাকে। একবার অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে এই টিউমারকেটে ফেলার পর
দ্বিতীয়বার হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই টিউমার বড়
আকৃতি ধারণ করে থাকে।
আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের যদি বেনাইম টিউমার দেখা দেয় তাহলে সেটি ক্ষতিকারক
না হলেও যদি আমাদের মস্তিষ্কে বেনাইম টিউমার দেখা দেয় তাহলে এটি আমাদের
মস্তিষ্কের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।বিনাইন টিউমারের উদাহরণের মধ্যে একটি হচ্ছে
আঁচিল।
বিনাইন টিউমার কেন হয়
বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের জন্য খুব একটা ক্ষতিকারক না হলেও বিনাইন টিউমার কে
অবহেলা করা যাবে না। অবশ্যই বেনাইন টিউমার দেখা দিলে চিকিৎসকের নিকট গিয়ে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
কারো শরীরে টিউমার দেখা দেওয়ার কিছু কারণ রয়েছ। যে সকল কারণে একজন ব্যক্তি
টিউমারে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বেশ কিছু কারণ রয়েছে যে সকল কারণে একজন ব্যক্তির
বিনাইন টিউমার হয়ে থাকে। আপনাদের জানার সুবিধার্থে বিনাইন টিউমার কেন হয় তা
আলোচনা করলাম।
- বিনাইন টিউমার হওয়ার একটি প্রধান কারণ হচ্ছে পরিবেশের বিষাক্ততা। অনেকেই রয়েছেন যারা বিষাক্ত পরিবেশে কাজকর্ম করেন। সেই সকল ব্যক্তি বিনাইন টিউমারে আক্রান্ত হতে পারেন।
- অনেকেই অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করেন। সব সময় স্ট্রেস এ থাকেন। সেই ব্যক্তির বিনাইন টিউমার হওয়ার জন্য এটিও দায়ী হতে পারে।
- কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় যে জেনেটিক্স কারণেও শরীরে বিনাইন টিউমার হয়ে থাকে।
- বিভিন্ন রকম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের কারণেও একজন ব্যক্তি বিনাইন টিউমারে আক্রান্ত হতে পারে।
- একজন ব্যক্তি ইনফ্লামেশন বা সংক্রমণ এর কারনেও বিনাইন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
- স্থানীয় ট্রমা অথবা আঘাত এর কারনেও একজন ব্যক্তির বিনাইন টিউমার হতে পারে।
বিনাইন টিউমার কোথায় হয়
আপনাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে বিনাইন টিউমার কোথায় হয়। আমরা আমাদের
আর্টিকেলের এই পর্বে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বিনাইন টিউমার
এটি আমাদের শরীরের যেকোনো অংশে হতে পারে। বিনাইন টিউমার হওয়ার কোন নির্দিষ্ট
স্থান নেই। এটি আমাদের হাত-পা থেকে শুরু করে বুক অথবা শরীরের যে কোন অংশে হয়ে
থাকে।
এছাড়াও বিনাইন টিউমার কখনো কখনো আমাদের মাথাতেও হতে পারে। বিনাইন টিউমার আমাদের
শরীরের যে কোন অংশে হলে যতটা ভয়ংকর রূপ ধারণ করে তার থেকে বেশি ভয়ংকর রূপ ধারণ
করে যখন এটি আমাদের ব্রেন এ হয়ে থাকে। বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরে বাহ্যিক পৃষ্ট দিয়ে ঘেরা এ ধরনের টিউমার। এই টিউমার মেটাস্ট্যাসাইজড হয় না।
বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের একটি অংশে রক্ত সরবরাহ করতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে
যার ফলে আমাদের শরীরের সেই স্থানের টিসুগুলো মারা যায় এবং আমাদের অঙ্গের ক্ষতি
হয়। বিনাইন টিউমার ব্রেন সহ আমাদের ফুসফুসের নালি অথবা ঘাড়ের ভেতরে যদি হয়
তাহলে তা আমাদের জন্য মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
বেনাইন টিউমার চেনার উপায়
আমরা এখন আপনাদের সামনে বেনাইন টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে আলোচনা
করব। বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের যে কোন অংশে দেখা দিতে পারে। অনেক
সময় বিনাইন টিউমার আমাদের ব্রেনে দেখা দেয় যা অনেক বেশি মারাত্মক আকার ধারণ করে।
বেনাইন টিউমার কোন স্থানে দেখা দিলে তার বৃদ্ধি হয় খুবই ধীর গতিতে। বিনাইন
টিউমার বাহ্যিক পৃষ্ঠ দ্বারা আবৃত থাকে। বিনাইন টিউমার দ্বারা
কোন স্থান আক্রান্ত হলে শুধুমাত্র সেই স্থানেই টিউমারটি অবস্থান করে শরীরের
অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে না।
বিনাইন টিউমারের লক্ষণ
অনেকেই হয়তো জানেন না বিনাইন টিউমারের লক্ষণ গুলো কি। আসলে বিনাইন টিউমারের
ক্ষেত্রে ঠিক তেমন কোন কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এই টিউমার আমাদের শরীরে এক
ধরনের সুপ্ত অবস্থায় থাকে বলা যেতে পারে। যদি কোন ব্যক্তির শরীরের কোন স্থানে
বিনাইন টিউমার হয় তাহলে সেই স্থান এর মাংস বেড়ে যেতে পারে এবং একটু শক্ত হতে
পারে।
এছাড়া বিনাইন টিউমারের কোনরকম লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু যদি বিনাইন টিউমার
আমাদের ব্রেনে অথবা ফুসফুসের নালি ও হাড়ের ভেতর হয়ে থাকে তাহলে কিছু কিছু লক্ষণ
দেখা দিতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের জন্য খুব একটা
ক্ষতিকর না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিনাইন টিউমার আমাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে
ওঠে।
কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বিনাইন টিউমার থেকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমারে পরিণত
হয়েছে। আর যদি কোন ব্যক্তির ম্যালিগন্যান্ট টিউমার এ আক্রান্ত হয় তাহলে তার
ভেতর কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। যা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
- আক্রান্ত ব্যক্তির ওজন হঠাৎ করেই কমে যেতে পারে।
- আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক ক্লান্তি এবং অবসাদ দেখা দেবে।
- দীর্ঘদিন কাশি থাকতে পারে।
- কাশির সাথে সাথে রক্ত বের হতে পারে।
- কারো কারো ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দেখা দেয়।
- মল ত্যাগের মধ্যে পরিবর্তন দেখা দেবে।
- শরীরের যেকোনো অংশ থেকে অস্বাভাবিক তরল বের হতে দেখা দেবে।
- খাবার খাওয়ার সময় গলায় এবং বুকে চাপ অনুভব হতে পারে।
বিনাইন টিউমার এর চিকিৎসা
আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই পর্বে আপনাদের সামনে বিনাইন টিউমার এর চিকিৎসা
সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যদি কোন ব্যক্তির শরীরে বিনাইন টিউমার
দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই তাকে চিকিৎসকের নিকট গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে এবং তার
টিউমারের অবস্থানের উপর নির্ভর করে তাকে চিকিৎসা প্রদান করা হবে।
সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বিনাইন টিউমার ঔষধ
দ্বারা ভালো হয়ে যাই। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি ঔষধ দ্বারা এই টিউমার ভালো
না হয় তাহলে অস্ত্র পাচার করে শরীরের অংশ থেকে এই টিউমার কেটে ফেলা হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই টিউমার একবার অস্ত্রপাচার করার পর দ্বিতীয়বার হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে না। তাই আপনারা বিনাইন টিউমার থেকে অপারেশন এর মাধ্যমে মুক্তি পেতে
পারেন।
টিউমার থেকে কি ক্যান্সার হয়
টিউমার থেকে কি ক্যান্সার হয় এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে প্রথমে আমাদেরকে জানতে
হবে টিউমার কি এবং ক্যান্সার কি। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত একটি নির্দিষ্ট সময়
পার হওয়ার পর শরীরের কোষ নষ্ট হয় অথবা মারা যায়। মারা যাওয়া কোষ গুলোর স্থানে
জায়গা করে নেয় আমাদের শরীরের নতুন কোষ।
আর যদি কোন কারণেই এই কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন আমাদের
মাংসের নিচে এক ধরনের দলা তৈরি হয়। আর এই দলাকেই বলা হয়ে থাকে টিউমার। এই
টিউমার সাধারণত হয়ে থাকে দুই ধরনের। দুই টিউমারের মধ্যে একটি হচ্ছে বিনাইন
আরেকটি হচ্ছে ম্যালিগন্যান্ট। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের অপর নাম হচ্ছে
ক্যান্সার।
তাহলে এই আলোচনা থেকে খুব সহজেই বোঝা যায় যে টিউমার থেকে ক্যান্সার হতে পারে।
যদি আমাদের শরীরের টিউমারটি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হয় তাহলে সেই টিউমার খুব
সহজেই ক্যান্সারের রূপ নেবে। কিন্তু যদি আবার সেই টিউমার বিনাইন টিউমার হয় তাহলে
সেক্ষেত্রে সেই টিউমার ক্যান্সারের রূপ নিতে নাও পারে।
পরামর্শমূলককিছু কথা
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, বিনাইন টিউমার চেনার উপায় আর্টিকেল দ্বারা আমরা আপনাদের সামনে
বিনাইন টিউমার সম্পর্কে ছোট বড় তথ্য তুলে ধরেছি। আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন
বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক কি না।
যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিনাইন টিউমার আমাদের শরীরের জন্য প্রাণঘাতী আকার ধারণ
করে না তাও অবশ্যই বিনাইন টিউমার দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের নিকট যেতে
হবে এবং চিকিৎসা করাতে হবে। টিউমার সম্পর্কে আর কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের
মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
''ধন্যবাদ''
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url