মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয় সেই সম্পর্কে জানুন
গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা জানুনঅনেকেই রয়েছেন যারা অনেক বছর থেকে চেষ্টা করার পরে ও বাচ্চার মুখ দেখতে পান না।
কোন একজনের মুখে শুনেছেন মরিয়ম ফুল খেলে বাচ্চা হয়। এখন হয়তো আপনি জানেন না
মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয়। যেকোনো সময় যেকোনো ভাবে মরিয়ম ফুল খেলেই যে
বাচ্চা হবে তা কিন্তু নয়। আপনি যদি চান আল্লাহ তায়ালার রহমতে আপনার ঘরে একটি
ফুটফুটে বাচ্চা আসুক তাহলে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে
বাচ্চা হয়। আপনাদেরকে মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয় এই সম্পর্কে জানানো
আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
আশা করছি আপনারা আমাদের এই আর্টিকেলটি করার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন মরিয়ম ফুল
কিভাবে খেলে বাচ্চা হয়। তাই এখন দেরি না করে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
মন দিয়ে পড়ুন।
মরিয়ম ফুল কি কাজ করে?
এখনকার সময় দেখা যায় অনেকেই রয়েছেন যারা হজ্জ করতে গিয়ে মরিয়ম ফুল ক্রয় করে
থাকেন। কারণ এই মরিয়ম ফুলের রয়েছে অনেক গুনাগুন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে
মরিয়ম ফুলের পাপড়ি যদি পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় এবং সেই ভিজিয়ে রাখা পানি পান
করা যায় তাহলে প্রসবকালীন ব্যথা কমে যায়।
তাছাড়াও বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে এই মরিয়ম ফুল এর গন্ধ গ্রহণ করার
কারণে অর্থাৎ মরিয়ম ফুল শুকার মাধ্যমে হযরত মারিয়াম (আঃ) গর্ভধারণ করেছিলেন।
তাই অনেকেই আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস রেখে গর্ভধারণের একটি প্রধান মাধ্যম
হিসেবে মরিয়ম ফুল ব্যবহার করে থাকেন।
মরিয়ম ফুলের গুনাগুন
মরিয়ম ফুল দেখতে অনেকটা মৃত ফুল মনে হয়। এই ফুল এমন ভাবে শুকিয়ে থাকে যেন মনে
হয় যেন অনেকদিন আগেই এই ফুল মরে গেছে এবং শুকিয়ে গেছে। কিন্তু এই ফুলের উপর যখন
বৃষ্টি হয় অথবা এই ফুল পানির সংস্পর্শে আসলে দেখা যায় জাদু করি প্রভাব।
কারণ পানির সংস্পর্শে আসার সাথে সাথেই এই ফুল যেন তার নতুন জীবন ফিরে পাই।
পুরোপুরিভাবে একটি জীবিত ফুলের ন্যায় হয়ে যাই। মরিয়ম ফুলে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম।
মরিয়ম ফুলের পানি খেলে কি হয়
অনেকেই রয়েছেন যারা মরিয়ম ফুল পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করে থাকেন।
মরিয়ম ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম যা
আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
এছাড়াও এটি আমাদের কিডনি এবং হার্টের জন্য অনেক বেশি উপকারী। মরিয়ম ফুলের মাঝে
উপস্থিত ক্যালশিয়াম আমাদের দাঁত এবং হাড় মজবুত করতে অনেক বেশি সাহায্য
করে।
এছাড়াও আমাদের সমাজে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে মরিয়ম ফুলের পানি খেলে যে সকল
মায়েরা গর্ভধারণ করতে পারে না তাদের গর্ভধারণের সমস্যা সমস্যা হয়। এছাড়াও
প্রসবকালীন সময়ের সমস্যা সমাধান করতেও মরিয়ম ফুলের পানির রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা।
কোথায় থেকে এসেছে মরিয়ম ফুল
সর্বপ্রথম মরিয়ম ফুল কোথায় থেকে এসেছে এটির সঠিক তথ্য এখন পর্যন্ত সকলের কাছে
অজানা রহস্য। কারণ এখন পর্যন্ত কোন হাদিসে একেবারেই কোথায় থেকে এসেছে মরিয়ম ফুল
এটি বর্ণনা করা হয়নি। হাজার হাজার বছর পূর্ব থেকে মেরু অঞ্চলে এই ফুলের পরিচিতি
রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় জানুন
এই মরিয়ম ফুলের নামকরণ করা হয়েছে ঈসা আলাইহিস সালাম এর মাতা মরিয়ম আলাইহিস
সালাম এর নাম দ্বারা। কারণ মরিয়ম ফুলের ইতিহাস খুঁজতে গেলেই পাওয়া যায় যে হযরত
মরিয়ম আলাইহিস সালাম কোন পুরুষের স্পর্শ ছাড়াই শুধুমাত্র মরিয়ম ফুল শুকার
মাধ্যমে গর্ভধারণ করেছিলেন। যদিও এই সকল হাদিস ১০০% প্রমাণিত নয়।
সৌদি আরবের কোথায় মরিয়ম ফুল পাওয়া যায়
মরিয়ম ফুলের জন্ম মরুভূমি অঞ্চলে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্চ্য এবং সাহারার
বিস্তীর্ণ মরুভূমি অঞ্চলে এই ফুলের জন্ম হয়েছে। বছরের পর বছর এই গাছ প্রচণ্ড
গরমে শুকিয়ে মাটিকে আকড়ে ধরে থাকে। দেখে মনে হয় যে কোন শুকনো মরা ফুল মাটির
সাথে লেগে আছে।
মরিয়ম ফুলের গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে “ Anastatica Hierochuntica” যা মরুভূমি
অঞ্চলের প্রচন্ড গরমে শুকিয়ে পাথরের ন্যায় নির্জীব হয়ে থাকে। মরিয়ম ফুল বেশ
কয়েক শতাব্দী ধরেই সৌদি আরবে পাওয়া যায়। বর্তমানে শুধুমাত্র সৌদি আরব ছাড়াও
পাকিস্তান, আফ্রিকা, মালেশিয়া ইত্যাদি দেশগুলোতেও মরিয়ম ফুল দেখা যাচ্ছে।
মরিয়ম ফুল এর দাম কত?
অনেকে রয়েছেন যারা হজ্জ করতে গিয়ে মরিয়ম ফুল কিনতে চান। কিন্তু অনেক সময়
মরিয়ম ফুলের দাম নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। কারণ বিভিন্ন বিক্রেতা রয়েছে
যারা সুযোগ সন্ধানী হয়ে থাকেন। যার কাছে যেমন পারেন তার কাছ থেকে তেমন দাম নিতে
পারেন।
তাই অবশ্যই আপনি মরিয়ম ফুল কিনতে চাইলে আপনাকে প্রথমে মরিয়ম ফুলের সঠিক দাম
সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি সৌদি আরবে গিয়ে মরিয়ম ফুল কিনতে চান তাহলে একটি
মরিয়ম ফুল কিনতে বাংলাদেশী টাকার প্রয়োজন হবে ৯৯৯ টাকা।
তাছাড়া যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে মরিয়ম ফুল ক্রয় করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে
মরিয়ম ফুল বিক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে। কিন্তু ধারণা করা যায় যে
বাংলাদেশে একটি মরিয়ম ফুলের টাকা ৫০০ থেকে শুরু করে ৫০০০ হয়ে থাকে। ফুলের দাম
কত পড়বে তা নির্ভর করে ফুলের কোয়ালিটির উপর।
গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুল এর ব্যবহার
গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুলের ব্যবহার বিভিন্ন জনের মধ্যে বিভিন্ন রকম মতবিরোধ
লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই মনে করেন যে গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুল খেলে বাচ্চার ক্ষতি
হতে পারে। আবার কিছু কিছু ব্যাক্তি রয়েছেন যারা মনে করেন গর্ভাবস্থায় মরিয়ম
ফুল খেলে বাচ্চা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়।
গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুল খেলে বাচ্চার কোন ক্ষতি হবে এই বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা
সম্ভব নয়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুল খেলে গর্ভে থাকা শিশুর ক্ষতি হতেও
পারে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুল খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে
হবে।
আর মরিয়ম ফুল খেলে যে বাচ্চার ছাত্রের উপকার হবে এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন রকম
প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমাদের সমাজে একটি প্রচলন আছে গর্ভবতী মায়ের পাশে যদি
মরিয়ম ফুল ভিজিয়ে রাখা হয় তাহলে প্রসবকালীন সময়ে যখন সেই ফুলটি ফুটে উঠবে তখন
সেই গর্ভবতী মা খুব সহজেই সন্তান জন্ম দিতে পারবেন।
এই কথাটির কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এছাড়াও ইসলামেও এই কথাটির নির্দিষ্ট প্রমাণ
পাওয়া যায়নি। সুতরাং বলা যায় যে গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুলের ব্যবহার এটি
শুধুমাত্র গল্প কাহিনী। মরিয়ম ফুল এর সাথে প্রসবকালীন ব্যথার কোন সম্পর্ক নেই।
মরিয়ম ফুলের উপকারিতা
মরিয়ম ফুলের মাঝে রয়েছে বেশ কিছু উপকার। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা
সমাধান করতে সাহায্য করে থাকে। এখন তাহলে জেনে নিন মরিয়ম ফুলের উপকারিতা গুলো কি
কি।
গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করেঃ মরিয়ম ফুলের রয়েছে একটি বিশেষ গুণ। যা
গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে থাকে। অনেক মহিলা রয়েছেন যারা অনেক বছর থেকে
চেষ্টা করার পরেও গর্ভধারণ করতে পারেন না তারা গর্ভধারণের জন্য এই ফুলের পানি পান
করে থাকেন। কিন্তু এটি নিশ্চিত ভাবে এখনো প্রমাণিত হয়নি।
গর্ভকালীন সময়ে স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ গর্ভকালীন সময়ে মরিয়ম ফুল খেলে
গর্ভে থাকা সন্তানের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে। কিন্তু এটি এখন পর্যন্ত
নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হয়নি। তাই অবশ্যই এটি খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ
নিবেন।
স্তন্যদান এর উন্নতিঃ অনেক নবজাতক মা রয়েছে যারা স্তন্যদানের সমস্যার
পড়ে থাকেন। আর সেই সমস্যা সমাধানের জন্য মরিয়ম ফুল খেয়ে থাকেন। কারণ অনেকের
বিশ্বাস মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে স্তন্যদানের সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে। এই
কথাটির এখন পর্যন্ত সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
প্রজনন বৃদ্ধি করেঃ মরিয়ম ফুলে রয়েছে বিভিন্ন রকম উপাদান যা একজন মহিলার
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। মরিয়ম ফুল ইস্ট্রোজেন হরমোন
এর মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে যা একজন মহিলার ডিম্বাশয় এর স্বাস্থ্যের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ এখনকার সময়ে আমাদের আশেপাশে ক্যান্সারের ঝুঁকি
দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর বেশিভাগ ক্যান্সার রোগীর শেষ পরিণতি দেখা যায় মৃত্যু।
মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে একজন মানুষের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায়। এটি অনেকেই মনে করে থাকেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ মরিয়ম ফুল আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই যে সকল ব্যক্তি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে
চিন্তিত আছেন তারা মরিয়ম ফুল খেতে পারেন।
হজম শক্তি বাড়ায়ঃ মরিয়ম ফুল আমাদের শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর
করে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে হজম শক্তি বাড়ায়। মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে একজন
ব্যক্তির হজম শক্তি খুব সহজেই বৃদ্ধি পেতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন।
মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ আমাদের মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে মরিয়ম
ফুলের ভূমিকা অনেক বেশি। মরিয়ম ফুলে উপস্থিত ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁতের ক্ষয় ও
মাড়ির সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয়
মরিয়ম ফুল খাওয়ার ফলে বাচ্চা হয় এই কথাটি অনেক জোর দিয়েই আমাদের সমাজে
প্রচলিত আছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এই ধারণাটি একেবারেই ভুল। কারণ গর্ভধারণের
সাথে মরিয়ম ফুলের কোনরকম সম্পর্ক থাকে না। অনেকে রয়েছে যারা মনে প্রানে বিশ্বাস
করে মরিয়ম ফুল খেয়ে থাকে।
আর খাওয়ার ফলে এর কার্যকরিতা দেখা যাই। এটি হয় শুধুমাত্র তার বিশ্বাসের উপর।
কারণ আল্লাহ তা'আলা সব পারেন। তার ওপর বিশ্বাস রেখে যদি কেউ মরিয়ম ফুল খেয়ে
থাকেন তাহলে মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে গর্ভধারণ করতে পারেন।
কিন্তু এটির কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আপনি যদি বিশ্বাসের সাথে মরিয়ম ফুল খেতে
চান তাহলে মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয় সেই সম্পর্কে জানিয়ে দিচ্ছি।
মরিয়ম ফুল সরাসরি খেতে পারবেন না। এই ফুল ভিজিয়ে রেখে তার পানি খেতে হবে।
মরিয়ম ফুল রাতের বেলায় একটি পাথরে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সারারাত সেই ফুল পানিতে
ভিজে থাকবে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে সেই পানি পান করতে হবে। আর অবশ্যই বিশ্বাসের
সাথে পান করতে হবে। কিভাবে করে ২১ দিন মরিয়ম ফুল ভেজানো পানি খেতে হবে।
তিন মাসে ২১ দিন করে এই ফুল ভেজানো পানি খেলে গর্ভধারণ করা সম্ভব বলে অনেকেই মনে
করেন। অর্থাৎ প্রথম মাসে খাবেন ২১ দিন তারপর বাকি দিন বন্ধ থাকবে এবং দ্বিতীয়
মাসে খাবে ২১ দিন তারপর আবার বন্ধ থাকবে তৃতীয় মাসে খাবে ২১ দিন।
কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এই কথা এখন পর্যন্ত কোন সত্যতা প্রমাণ হয়নি। তাই
অবশ্যই আপনি গর্ভধারণের জন্য শুধুমাত্র মরিয়ম ফুলকে মাধ্যম করবেন না। গর্ভধারণের
সমস্যা সমাধানের জন্য ভালো চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।
মরিয়ম ফুল খেলে কি সত্যি বাচ্চা হয়?
সমাজে প্রচলিত একটি ধারণা আছে মরিয়ম ফুল খেলে বাচ্চা হয়। আর অনেকদিন থেকেই এই
ধারণা চলে আসছে। সমাজে প্রচলিত এই ধারণা অনেকে মনে প্রানে বিশ্বাস করে থাকেন।
কিন্তু মরিয়ম ফুল খেলে বাচ্চা হয় এটি একেবারেই ভুল ধারণা।
কারণ বাচ্চা হওয়ার সাথে মরিয়ম ফুলের কোন সম্পর্ক নেই। বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোন
সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মরিয়ম ফুলের সাথে গর্ভধারণের এই প্রক্রিয়াটি
একেবারেই ভুল। কিন্তু অনেকের মনেই এখনো এই বিষয় নিয়ে ভুল ধারণা জন্মে রয়েছে
কিন্তু কেন জন্মে রয়েছে তা আলোচনা করলাম।
১। মরিয়ম ফুলের গঠনঃ মরিয়ম ফুল দেখতে শুকনো এবং মরা ফুলের মত। এই ফুলের
গঠন কিছুটা গর্ভকালীন নারীর পেটের সঙ্গে মিল রয়েছে। সেই কারণে অনেকেই মনে করেন
এই ফুল খাওয়ার কারণে গর্ভধারণ করা সম্ভব।
২। ভুল তথ্যঃ আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আমাদের মাঝে একটি ভুল তথ্য
চলে আসছে। আগেকার যুগের মানুষ মনে করতেন এই ফুল খেলে গর্ভধারণ করা সম্ভব। আর এটি
এখন পর্যন্ত আমাদের মাঝে লক্ষ্য করা যায়।
৩। মানসিক প্রভাবঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে মরিয়ম ফুল
খাওয়ার ফলে মহিলা গর্ভধারণ করেছে আর সেই কারণে অনেকের মনেই মানসিক প্রভাব সৃষ্টি
হয় যে মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে গর্ভধারণ করা সম্ভব।
৪। বাস্তবতা জানার অভাবঃ মরিয়ম ফুল খাওয়ার ফলে গর্ভধারণ হওয়ার মতো কোনো
বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। গর্ভধারণ করার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে একজন পুরুষের শুক্রাণু
একজন মহিলার ডিম্বাণুতে সংযুক্ত হওয়া। মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে শুধুমাত্র এর
ভেতরে উপস্থিত থাকা ক্যালসিয়াম দ্বারা আমাদের শরীরের উপকার হতে পারে গর্ভধারণ
নয়।
মরিয়ম ফুলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
মরিয়ম ফুলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা বলতে গেলে বলা যায় যে মরিয়ম ফুলের
কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে
মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে এলার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও
কারো কারো ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে মরিয়ম ফুল খাওয়ার কারণে বমি বমি ভাব
হচ্ছে যদি এমনটা হয় তাহলে মরিয়ম ফুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
মরিয়ম ফুল কোথায় পাবো
এখন শুধুমাত্র সৌদি আরব ছাড়াও বিভিন্ন দেশে মরিয়ম ফুল কিনতে পাওয়া যায়। আপনি
যদি চান দেশে বসেই মরিয়ম ফুল ক্রয় করবেন তাহলে এটি ক্রয় করার জন্য আপনাকে
যেকোনো ভেষজ ঔষধের দোকানে যেতে হবে। সাধারণত বড় বড় ধরনের ভেষজ ঔষধের দোকানে
মরিয়ম ফুল কিনতে পাওয়া যাই। তাছাড়াও এখন অনলাইন এর মাধ্যমেও মরিয়ম ফুল কিনতে
পাওয়া যায়।
মরিয়ম ফুল ভেজানোর নিয়ম
অনেকেই রয়েছেন বিশ্বাসের সাথে গর্ভধারণের উদ্দেশ্যে এবং প্রসবকালীন ব্যথা কমানোর
জন্য মরিয়ম ফুল ব্যবহার করে থাকেন। যদিও এগুলোর সাথে মরিয়ম ফুলের বৈজ্ঞানিক কোন
প্রমাণ নেই। তবুও অনেকে রয়েছেন এগুলোর ব্যবহার করেন। আমি আপনাদের জানার জন্য
মরিয়ম ফুল ভেজানোর নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করলাম।
প্রসবকালীন সময়ে মরিয়ম ফুলের যেভাবে ব্যবহার করবেন তা হচ্ছে যখন গর্ভবতী মায়ের
ডেলিভারি ব্যথা উঠবে কখন এই ফুলটিকে ডেলিভারি রুমে একটি খোলা পাত্রে হালকা কুসুম
গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ফুলটি যখন পানিতে রাখা হবে আস্তে আস্তে সেই ফুলটি
ফুটতে থাকবে।
অনেকেই মনে করেন ফুল ফোটার সাথে সাথে গর্ভবতী মায়ের জরায়ুর মুখ খুলতে শুরু করে।
বাচ্চা হওয়ার পর ফুলটি পানির ভিতর থেকে উঠিয়ে নিতে হবে। পানির ভিতর থেকে ফুলটি
তোলার পর আবার ফুলটি আগের মতো হয়ে যাবে। কারণ এটি একাধিক বার ব্যবহার করা যাই।
মরিয়ম ফুলের ছবি
মরিয়ম ফুলের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা অন্য ফুলের মাঝে নেই। মরিয়ম ফুল
চিনতে আলাদা কোন বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন হয় না। অনেকেই রয়েছেন যারা মরিয়ম ফুল
দেখতে কেমন তা জানেন। নিচে আপনাদের জন্য কিছু মরিয়ম ফুলের ছবি তুলে ধরলাম।
চিত্রঃ০১
চিত্রঃ০৩ লেখকের মন্তব্যঃ মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয়
মরিয়ম ফুলকে এক ধরনের ঔষধি ফুল ও বলা হয়ে থাকে। মরিয়ম ফুল খাওয়ার ফলে
গর্ভধারণ না করলেও এর কারণে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। মরিয়ম ফুল খাবার কারণে
যেমন বাচ্চা হবে এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি ঠিক তেমনই গর্ভাবস্থায় মরিয়ম ফুল
খাওয়ার কারণে বাচ্চার ক্ষতি হবে এটিও প্রমাণ হয়নি।
গর্ভধারণের জন্য শুধুমাত্র মরিয়ম ফুলের আশায় না বসে থেকে এর পাশাপাশি আপনারা
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। আশা করছি আপনারা মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা
হয় আর্টিকেলটি পড়ে মরিয়ম ফুল সম্পর্কে সকল ধরনের তথ্য জানতে পেরেছেন।
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url