সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে জানুন ও সতর্ক হন
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় জানুনসিজার করে বেবি নেওয়া এটি যেন প্রতিটি ঘরে ঘরে একটি কমন বিষয় হয়ে
দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় সিজারের জায়গায় নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
আপনার যদি সে রকম কোন সন্দেহ হয়ে থাকে তাহলে আমাদের লেখা সিজারের পর ইনফেকশনের
লক্ষণ আর্টিকেলটি পড়ুন। আমরা আমাদের আর্টিকেল সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ সিজার
সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাজিয়েছি।
আমি নিশ্চিত আপনারা যদি আমাদের লিখা সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ আর্টিকেলটি পড়েন
তাহলে সিজার করার পর যে যে সমস্যা হয় তা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন খুব সহজেই
বুঝতে পারবেন।
সিজারের পর শোয়ার নিয়ম
অনেক নবজাতক মা রয়েছেন যারা সিজারের পর ঘুমানো নিয়ে অনেক বেশি অসুবিধাই পড়েন।
সিজারের পর একজন মহিলার ক্ষেত্রে নড়াচড়া করা কিংবা ভালোভাবে শোয়ার ক্ষেত্রেও
দেখা দেয় বিভিন্ন রকম অসুবিধা। অনেকের ক্ষেত্রে তো দেখা যায় যে রাতের পর রাত
ঘুমাতে পারেন না।
সিজারের পর শোয়ার জন্য কোনোরকম বিশেষ নিয়ম নেই। একেক জন মহিলা একেক রকম ভাবে
ঘুমাতে কমফোর্টেবল ফিল করতে পারেন। তাই অবশ্যই একজন মহিলা যে নিয়মে ঘুমিয়ে আরাম
পাবেন অন্যজন মহিলাও যে সেই নিয়মে ঘুমিয়ে আরাম পাবেন তা কিন্তু নয়।
কিন্তু কিছু কিছু নিয়ম রয়েছে যে সকল নিয়ম অনুযায়ী শোয়ার কারণে আপনার ঘুম
ভালো হতে পারে। আপনাদের সুবিধার জন্য আমি কিছু নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করলাম আপনি
সেই নিয়ম গুলোর ভেতর যেটিতে কমফোর্টেবল ফিল করেন সেই নিয়ম অনুযায়ী ঘুমাতে
পারেন।
কাত হয়েঃ সিজারের পর আপনার ভালোভাবে ঘুমানোর ভালো নিয়ম হচ্ছে কাত হয়ে
ঘুমানো। সিজারের পর একজন মহিলার উঠা বসা করতে অনেক বেশি সমস্যা হয়ে থাকে। যদি
আপনি কাত হয়ে ঘুমান তাহলে কনুই থাকবে বিছানার উপর।
এতে করে আপনি খুব সহজেই কনুই এর উপর ভর দিয়ে বিছানা থেকে উঠে বসতে পারবেন।
এছাড়াও কাত হয়ে ঘুমানোর ফলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং যে কোন খাবার খুব
সহজেই হজম হয়ে যায়। তাই এটি আপনার জন্য হতে পারে সর্বোত্তম একটি নিয়ম।
শরীরের উপরিভাগ উঁচু রেখেঃ সিজারের পর শোয়ার আরেকটি ভালো নিয়ম হচ্ছে
শরীরের উপরিভাগ উঁচু করে রাখা। সিজারের পর বালিশ অবশ্যই সেই মহিলার জন্য একটি
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
সিজারের পর যদি শরীরের উপরিভাগের নিচে কোমরের সোজাসুজি বালিশ দিয়ে উপরিভাগ উঁচু
করে রাখেন তাহলে আপনার যদি কোন রকম শ্বাস-নিশ্বাস এর সমস্যা হয় সেই সমস্যা কমে
যাবে এবং ঘুম ভালো হবে। তাই নিশ্চিন্তে আপনি সিজারের পর এই পদ্ধতিটি বেছে নিতে
পারেন।
চিৎ হয়েঃ অনেক মহিলা রয়েছেন যারা সিজার করার পর চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে
অনেক বেশি আরামদায়ক মনে করে থাকেন। আপনি যদি সিজারের পর চিৎ হয়ে শুয়ে থাকেন
তাহলে এটিতে একটা সুবিধা হবে যে আপনার কাটা স্থানে কোন রকম চাপ পড়বে না।
কিন্তু বিছানা থেকে উঠার সময় একটু সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আপনার ওঠার সময়
কাটা স্থানে আঘাত পেতে পারেন। তাই যখন আপনি বিছানা থেকে উঠবেন তখন কাত হয়ে কনুই
এর উপর ভর দিয়ে উঠে বসতে পারেন।
সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন
সিজারের পর নবজাতক মায়েদের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে একে তো ঘুমের
সমস্যা দ্বিতীয়ত সন্তানের জ্বালাতন। আর সেই কারণেই সিজারিয়ান মা নিজের সিজারের
কাঁটা স্থানের যত্ন নিতে পারেন না। আর যত্ন না নেয়ার কারণে মাঝে মাঝে সেই কাঁটা
স্থানে পানি বের হওয়া থেকে শুরু করে ব্যথাও হতে পারে। যা পরবর্তীতে ইনফেকশনে
পরিণত হয়।
তাই সিজারের পর একজন সিজারিয়ান মাকে অবশ্যই তার কাটা স্থানের যত্ন নিতে হবে।
কিন্তু অনেক মহিলাই এই বিষয়ে অজ্ঞ আছেন যে কাটা ইসানের যত্ন কিভাবে নেবেন। তাই
আমি আপনাদের জানার সুবিধার্থে এখন আলোচনা করব সিজারের পর সেলাইয়ের যত্ন কিভাবে
নিবেন। সিজারের কাঁটা স্থানের যত্ন শুরু করতে হয় সিজার করার ২৪ ঘন্টার পর
থেকে।
সিজারের পর বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে মাকে অবশ্যই একটি আরামদায়ক পজিশনে
বসে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে হবে যেন কাটা স্থানে কোন রকম ভাবে আঘাত কিংবা চাপ না
লাগে। সিজার করার পর যদি হাঁচি অথবা কাশি আসে তাহলে অবশ্যই কাটা স্থানে হাত দিয়ে
আলতো ভাবে চেপে হাঁচি অথবা কাশি দিতে হবে।
সিজার করার সাত দিন পর সেলাই কাটার জন্য হাসপাতালে যেতে হবে। কাঁটা স্থানটি
সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হব। যদি কাটা স্থানের আশেপাশে ময়লা হয় কিংবা
কাঁটা স্থানে ব্যান্ডেজ টি ভিজে যায় তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে হবে। কাটা স্থানটি
পরিষ্কার করার সময় আলতো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে কোনরকম ভাবে ঘষা যাবে ন।
অনেক সময় দেখা যায় যে কাঁটা স্থানের আশেপাশে ফুলে উঠেছে।সেই ফোলা কমানোর জন্য
হালকা কুসুম গরম পানির সেক দিতে পারেন। এছাড়াও সেলাইয়ের যত্ন নেওয়ার জন্য
আপনাদেরকে কিছু কিছু কাজ এড়িয়ে চলতে হবে।যেমন
- বেশি ভারী কোন কিছু উঠানো যাবে না।
- সিঁড়ি দিয়ে অতিরিক্ত উঠানামা করা যাবে ন।
- ভারী কোন রকম ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- গরম পানির ব্যবহৃত বাথটাবে গোসল করা যাবে না।
- যৌন সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকাই
সিজার করার পর নবজাতক মায়েদের মনে কতই না প্রশ্ন থাকে। সিজারের পর কতদিন সেলাই
শুকায়, ব্যথা কতদিন থাকে,কতদিন পর কাটা স্থানে পানি ব্যবহার করতে পারবে আর ও কত
কি। এই ধরনের প্রশ্ন থাকবেই না কেন। সিজার একটি এমন অবস্থা যেখানে একটু ভুলের
কারণে হয়ে যেতে পারে বড় ধরনের ক্ষতি। তাই কোন কিছু করার পূর্বে বুঝে শুনে জেনে
করাই ভালো।
এখন সিজারের খেতে রে দুই ধরনের পদ্ধতি লক্ষ্য করা যায়। এক হচ্ছে নরমালের সেলাই
আরেকটি হচ্ছে প্লাস্টিক সার্জারি। নরমাল সেলাই যেখানে সেলাইয়ের সংখ্যা বেশি থাকে
আর প্লাস্টিক সার্জারিতে দুই থেকে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়ে থাকে। আপনি যদি নতুন
সেজারিয়ান মহিলা হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার মনেও প্রশ্ন জাগবে সিজারের কতদিন
পর সেলাই শুকাই।
যদি এমনটা হয় তাহলে জেনে নিন আসলেই সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকাই। একজন মহিলার
যখন সিজার করা হয় তাকে সাত দিন পর থেকে গোসল করার অনুমতি দেওয়া হয়। কারণ সাত
দিন পর থেকেই কাটা স্থান অনেকটা শুকাতে শুরু করে । তাই চিকিৎসকগণ এক ধরনের
অয়েন্টমেন্ট সাজেস্ট করেন সেটি ব্যবহার করে সাত দিন পর থেকেই রোগী গোসল করতে
পারেন।
সিজারের পর কাঁটার স্থান শুকাতে ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। কিন্তু এটি
শুধু বাইরের স্থান দেখে মনে হয় শুকিয়ে গেছে। কিন্তু ভেতরের ক্ষতস্থান শুকাতে
তিন মাস পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে ১০
থেকে ১৪ দিন পরেও কাঁটাস্থান শুকানোর পরিবর্তে তা থেকে হালকা রসের মত বের
হয়।
এক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে যে কাঁটা স্থানে ইনফেকশন হয়েছে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের
নিকট গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়
আমাদের এই কর্মব্যস্ত জীবনে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু
এই যাতায়াত যদি হয় সিজারের পর তাহলে মনে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন জাগতে পারে। কারণ
একজন মহিলা যখন সিজার করে তখন কিছুদিন তাকে স্বাভাবিক জীবন থেকে আলাদা জীবন যাপন
করতে হয়। কারণ সিজার করার পর বিভিন্ন রকম নিয়ম মেনে চলতে হয়।
সেই সকল নিয়মের মধ্যে একটি নিয়ম হচ্ছে জার্নি করা। সিজারিয়ান মা সিজার করার পর
বেশ কিছুদিন দূরে জার্নি করার ক্ষেত্রে একটু ভেবে চিন্তা করে জার্নি করতে হয়।
জার্নি করার ফলে সিজারের কাটা স্থানে আঘাত পেতে পারে। একজন মহিলার যখন সিজার হয়
তখন ডাক্তার সাধারণত সেই মহিলাকে বিশেষ কোনো ইমারজেন্সি ছাড়া তিন মাস দূরে কোথাও
জার্নি করতে নিষেধ করে থাকেন।
তবে তিন মাস কোন জার্নি করা যাবে না তা কিন্তু নয়। তিন মাসের ভেতর আপনি কাছে
কোথাও জার্নি নিশ্চিন্তে করতে পারেন। বিশেষ কোনো কারণে দূরে ও জার্নি করা যায়।
কিন্তু জার্নি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই জার্নি করার পূর্বে বেল্ট ব্যবহার করবেন। এতে
করে কাটা স্থানে আঘাত পাওয়ার ভয় থাকে না।
সিজারের পর ইনফেকশন কেন হয়
সিজার এখনকার সময়ে একটি কমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিজার কমন বিষয় হলেও এটি
এক ধরনের বড় অপারেশন বলা যেতে পারে। প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন সিজারিয়ান মা লক্ষ্য
করা যাই। এখনকার সময়ে মহিলারা নিজের ইচ্ছায় নরমাল ডেলিভারি না করিয়ে সিজার
করতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেন। সিজারের ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে খুব কম লক্ষ্য
করা যায় সিজার করার পরে সেই স্থানে ইনফেকশন হয়েছে।
সিজার করার পর একটু সতর্ক থাকলেই সেই স্থানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
খুব কম মহিলা রয়েছে যাদের সিজার করার পর ইনফেকশন এর মত সমস্যা হয়ে থাকে। কিছু
কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় সিজার করার পর সেই স্থানে ইনফেকশন হয়েছে। এটি
হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে কাটা স্থানের সঠিক পরিচর্যা না করা।
সিজার করার পর অবশ্যই সেই স্থানের যত্ন নিতে হবে। চিকিৎসকগণ যেই সকল নিয়ম বলবে
সে সকল নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং সঠিক নিয়মে ঔষধ খেতে হবে। অনেকে রয়েছেন যারা
কাটা স্থানের যত্ন নেয় না এবং সঠিক নিয়মে এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাই না আর সেই
কারণেই সেখানে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে।
সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ
সিজার করার পর সেই স্থানটিতে ইনফেকশন হয়েছে কিনা সেটি বাইরে থেকেই দেখে বোঝা
যায়। আপনি নিজেই বাইরে থেকে দেখে বুঝতে পারবেন আপনার কাঁটা স্থানটি ইনফেকশন
হয়েছে কিনা।
কিছু কিছু লক্ষণ রয়েছে যে সকল লক্ষণ দেখে খুব সহজেই বোঝা যায় কাটা জায়গাটিতে
ইনফেকশন হয়েছে। এখন আমরা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সামনে সিজারের পর
ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করব।
- কাটা স্থানটির আশেপাশে লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে।
- কাটা স্থানটি থেকে পুজ অথবা পানির মতো বের হবে।
- প্রসব করার পর পেটের ব্যথা।
- কাটা স্থানের আশেপাশে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
- ১০০ ডিগ্রী এর উপরে জ্বর আসতে পারে।
- মাসিকের রক্তক্ষরণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
- সিজারিয়ান মা এর পা পুনরায় খুলে যেতে পারে।
- কাটা স্থান হতে দুর্গন্ধযুক্ত তরল বের হতে পারে।
উপরের লক্ষণগুলো যদি আপনার কাটা স্থানে দেখতে পান তাহলে বুঝতে হবে আপনার কাটা
স্থানে ইনফেকশন শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব দেরি না করে চিকিৎসকের নিকট গিয়ে
পরামর্শ নিতে হবে।
সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয়
কোনরকম অসতর্কতার কারণে যদি আপনার কাটা স্থানে ইনফেকশন হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই
আপনাকে আরো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ কাটা স্থানে ইনফেকশন দেখা দিলে এটি
মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। যা একজন মহিলার জন্য বিপদ ডেকে নিয়ে আসবে। তাই
অবশ্যই সিজার হওয়ার পর যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন সেই স্থানে যেন ইনফেকশন না হয়। আর
যদি ইনফেকশন হয়েও যায় তাহলে কিছু করণীয় আপনাকে মেনে চলতে হবে। সিজারের পর
ইনফেকশন হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে আমরা আলোচনা করলাম।
- সিজারের পর সেই স্থানে ইনফেকশন হলে কাটা স্থানে সরাসরি হাত দিয়ে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ আপনার হাতে যদি কোনরকম জীবাণু থাকে তাহলে সেই জীবাণু আপনার কাটা স্থানের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে।
- কাটা স্থানে ইনফেকশন দেখা দিলে রোগীকে অবশ্যই ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। যেন তার কাটা স্থানটি দ্রুত শুকিয়ে যায়।
- খেয়াল রাখতে হবে রোগী যেন বেশি পরিমাণে পানি পান করে। কারন এই সময় রোগীর প্রসাবের সমস্যা হলে ইনফেকশনের জন্য এটি আরো খারাপ দিক হতে পারে। তাই রোগীর প্রসাব ক্লিয়ার রাখতে হবে।
- কাঁটা স্থানটি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কাটাস্থানের আশেপাশে যেন কোনরকম ময়লা বা অপরিষ্কার না থাকে।
- কাটা স্থানে কোনভাবে পানি ব্যবহার করা যাবে না।
- অবশ্যই রোগীকে ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। অতিরিক্ত চিপা পোশাক পড়লে সেটি ইনফেকশনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।
- ইনফেকশন দেখা দিলে সেই স্থান পরিষ্কার করার জন্য কোনরকম সাবান ব্যবহার করা যাবে না। কাটা স্থানটি ভায়োডিন দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে।
সিজারে কাটা শুকানোর জন্য কোন খাবার খাওয়া উচিত
সিজারের পর সবথেকে বড় চিন্তার বিষয় হচ্ছে কাঁটাস্থান শুকানো। নবজাতক মা অনেক
বেশি টেনশনে পড়ে যায় কাঁটা স্থান শুকানো নিয়ে। কাঁটাস্থান শুকানোর জন্য বাসায়
থাকা মুরুব্বীরা একেক জন একেক রকম পদ্ধতি সম্পর্কে বলে থাকেন। অনেকেই বলে থাকেন
সিজার করার পর সিজারিয়ান মহিলাকে দুধ খাওয়ানো যাবে না।
কিন্তু এটি একেবারেই ভুল ধারণা। কারণ সিজার করার পর একজন রোগীর ক্ষেত্রে দুধ অনেক
বেশি উপকারী হিসাবে কাজ করে। তাই অবশ্যই সিজার করার পর রোগীকে হালকা কুসুম গরম
দুধ খাওয়াতে পারেন। এছাড়াও সিজারের কাঁটা দ্রুত শুকানোর জন্য রোগীকে ভিটামিন সি
জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়াতে হবে।
ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ঘি এবং বাদাম খাওয়াতে পারেন। এটি
রোগের জন্য অনেক বেশি উপকারী। সিজার করার পর একজন মহিলা শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল
হয়ে পড়ে। তাই তাকে ফলমূল খাওয়াতে ভুলবেন না। নিয়মিত খাবার তালিকার মধ্যে একটি
করে ফল রাখার চেষ্টা করুন। সিজার করার পর সেই মহিলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ
খাবার হচ্ছে কালোজিরা।
কালোজিরা এমন একটি খাবার যার রয়েছে বহুগুণ উপকারিতা। তাই অবশ্যই সিজার করার পর
রোগীকে কালোজিরা খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। কালোজিরা কাটাস্থান দ্রুত শুকাতে এবং
মায়ের দুধ বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
সিজারের পর রোগীকে যেসব খাবার খাওয়ানো যাবে না
সিজার করার পর রোগীর খাবারের ক্ষেত্রে একটু বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ স্বাভাবিক
জীবনযাত্রায় একজন মানুষ যে সকল খাবার খাই সিজার করার পর রোগীকে সেই সকল খাবার
খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু যাচাই-বাছাই করে খেতে হবে।
সিজারের পর কিছু কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবার মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই
অপকারিতা বয়ে নিয়ে আসতে পারে। তাই সিজারের পর রোগীর খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে
একটু সতর্ক হোন। সিজারের পর রোগীকে যেসব খাবার খাওয়ানো যাবে না তা আলোচনা
করলাম।
সিজার করার পর রোগীকে চা এবং কফি জাতীয় পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চা
এবং কফি খাওয়ার কারণে মা ও শিশু দুজনেরই ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া
খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণ মসলা দেওয়া খাবার খাওয়া যাবে না।
শেষ কথা
সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলে ভয় না পেয়ে সতর্ক হোন। কারণ আপনি যদি
সতর্ক হোন তাহলেই শুধুমাত্র এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া সম্ভব। আশা করছি আপনারা
আমাদের লেখা সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ আর্টিকেলটি পড়ে ইনফেকশন কেন হয় ও
ইনফেকশন হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
সিজারিয়ান মায়েদের উদ্দেশ্যে বলবো ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ
চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। আর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। আশা করা যায়
খুব দ্রুত ইনফেকশনের হাত থেকে মুক্তি পাবেন। এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য
ধন্যবাদ।
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url