বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় - বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
গরু মোটাতাজাকরণ এর ঔষধের নামআপনার বাড়িতেও কি বিড়াল রয়েছে? আপনি কি বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় -
বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এখনই আমাদের লেখা
আর্টিকেল বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় - বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ পড়ুন।
আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আমাদের বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় - বিড়ালের
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ আর্টিকেলে বিড়ালের আঁচড় দিলে কি ভ্যাকসিন দিতে হয় সে
সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আশা করছি আপনারা বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় - বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
আর্টিকেল করার মাধ্যমে বিড়াল দ্বারা আপনার কোন কোন ক্ষতি হতে পারে তা জানতে
পারবেন।
বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয়
সকলের বাড়িতে সব থেকে যদি পোষা প্রাণী বলা হয়ে থাকে তা হচ্ছে বিড়াল। বড় আদরের
সাথে এই প্রাণীটি অনেকেই বাসায় পুষে থাকেন। খুব সহজেই পোষ মানে বলে এই প্রাণী
প্রায় অনেকেই বাসায় রাখেন। অনেক সময় বিড়াল জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
আর সেই সময় যদি বিড়াল কোন মানুষকে কামড় অথবা আঁচড় দেয় তাহলে হতে পারে ভয়ংকর
ক্ষতি। আমরা সকলেই জানি কুকুর এবং বিড়াল থেকে মানুষের শরীরে জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে
পড়ে।
আরও পড়ুনঃ ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় জেনে নিন
যখন কোন জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত কুকুর অথবা বিড়াল কোন মানুষকে কামড় দেয় তখন সেই
মানুষ ও জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। আমরা জানি যে এসব প্রাণী কামড় দিলে
জলাতঙ্ক হয়। কিন্তু অনেকেই জানিনা বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয়। বিড়ালের নখের
আঁচড়ে কি জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা অনেকেই জানিনা।
এই প্রশ্নের উত্তর জেনে নিন। যদি কোন একটি বিড়াল জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে
থাকে এবং সেই অবস্থায় যদি বিড়ালটি কোন মানুষকে আঁচড় দেয় তাহলে সেই ব্যক্তির
জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যদি কোন বিড়াল আঁচড় দেয় তাহলে তাতে কোন
কিছু হবে না এই ভুল ধারণা নিয়ে থাকা যাবে না। অবশ্যই বিড়ালে আঁচড় দিলে সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে। বিড়ালের সেই আচড় থেকেই হতে পারে আপনার ক্ষতি।
বিড়াল আঁচড় দিলে কি করতে হবে
বাড়িতে বিড়াল পুষি আর বিড়াল সব সময় আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে। ঘোরাঘুরি অবস্থায়
একদিন হঠাৎ করে পায়ে আচড় দিল। আর এই আঁচড়কে তেমন বড় কিছু না মনে করে কোন একটি
মলম দিয়ে রেখে দিলাম। এমন প্রায় লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই বিড়ালের কামড়কে
ক্ষতি মনে করলেও বিড়ালের আচড়কে তেমন একটা ক্ষতি হবে মনে করে না।
তাই বিড়াল আঁচড় দিলেও কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। এটি একেবারেই ভুল ধারণা।
কারণ বিড়ালের কামড় আপনার জন্য যতটা ক্ষতিকর ঠিক ততটাই ক্ষতিকর হচ্ছে বিড়ালের
আঁচড়। তাই বিড়াল আঁচড়ালেও নিতে হবে আপনাকে কিছু ব্যবস্থা। বিড়াল আঁচড় দিলে কি
করতে হবে জেনে নিন।
করনীয়ঃ আপনার বাড়ির পোষা বিড়ালটি যদি আপনার পায়ে আঁচড় দেয় তাহলে
প্রথম কাজ হবে আঁচড়ের জায়গায় সাবান দিয়ে ধোঁয়া। আঁচড়ের জায়গায় প্রচুর
পরিমাণে পানি ঢালতে হবে। সাবান এবং পানি দ্বারা বিড়ালের নক হতে যেই জীবাণু আপনার
পায়ে আসে তা ধুয়ে যায়।
প্রাথমিক অবস্থাতেই সাবান এবং পানি দিয়ে ধোয়ার পরে চিকিৎসকের নিকট গিয়ে
পরামর্শ নিতে হবে। আপনার পোষা বিড়ালটিকে যদি ভ্যাকসিন দেওয়া না থাকে তাহলে তার
আঁচড় থেকেও আপনার জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি কোন বিড়াল জলাতঙ্ক করবে
আক্রান্ত থাকে শুধুমাত্র তাহলেই তার আঁচড় থেকে জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে।
কিন্তু যদি বিড়ালটি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত না থাকে সুস্থ থাকে তাহলে তার আঁচড়
থেকে জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাই বলে একেবারেই নিশ্চিন্ত হয়ে থাকা
যাবে না। আঁচড় দিলে প্রাথমিক অবস্থাতেই সাবান এবং পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে।
বিড়ালের আঁচড় দিলে কি ভ্যাকসিন দিতে হয়
বিড়ালের আঁচড় দিলে কি ভ্যাকসিন দিতে হয় এটি নির্ভর করে বিড়ালের আচর কতটা গভীর
তার ওপর। বিড়ালের আঁচড় যদি আপনার শরীরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি না করে এবং সেই ক্ষত
থেকে যদি রক্ত বের না হয় তাহলে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ব্যবস্থা নিলেই হয়ে যায়। কিন্তু বিড়ালের আচর যদি আপনার
শরীরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে এবং সেই ক্ষতস্থান হতে রক্ত বের হয় তাহলে আপনাকে
ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। যখন ক্ষতস্থান হতে রক্ত বের হয় তখন সেই রক্ত
এবং জীবাণুর সংস্পর্শ ঘটে। যার ফলে আপনার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে
যায়।
যদি এমনটা হয় তাহলে প্রাথমিক অবস্থায় পানি এবং সাবান দিয়ে ধৌত করে চিকিৎসকের
নিকট গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাকসিন দিতে হবে। আপনারা
বিড়ালের আঁচড় দেওয়ার ক্ষেত্রে রেইবিজ ইমিউন গ্লবিউলিন অথবা আরাইজি ভ্যাকসিন
দিতে পারেন।
বিড়াল কামড় দিলে কি ক্ষতি হয়
বাড়িতে পোষা বিড়াল যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত না হয় তাহলে সেই বিড়ালের কামড়
থেকে খুব একটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু সেই বিড়াল যদি জলাতঙ্ক
রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে সেই বিড়ালের কামড়ে হতে পারে আপনার ভয়ংকর ক্ষতি।
তাই যদি কোন ভাবে আপনাকে বিড়ালে কামড় দেয় তাহলে সেটিকে অবহেলা করা যাবে না।
বিড়ালে কামড় দিলে আপনাকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিড়ালের যদি কামড় দেয়
তাহলে প্রাথমিক অবস্থাতে আপনাকে যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা হলোঃ
- প্রথমেই আপনাকে সাবান এবং পানি দিয়ে সেই স্থান ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
- তারপর সেই স্থানে কোন একটি অ্যান্টিবায়োটিক যেমন স্যাভলন অথবা ডেটল দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- যদি সেই স্থান হতে রক্তপাত হয় তাহলে রক্ত বন্ধ হলে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিতে হবে।
- যদি বিড়ালের কামড়ের স্থানটি ফুলে যায় অথবা লাল হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনারা আপনাদের স্থানে জীবাণু সংক্রমিত হয়েছে দ্রুত চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।
- বিড়াল কামড়ানোর পর যদি আপনার জ্বর আসে তাহলে বুঝতে হবে বিড়ালের কামড় আপনার জন্য ভয়ংকর আকার ধারণ করছে দ্রুত চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।
এবার জেনে নিন বিড়াল কামড় দিলে কি ক্ষতি হয়ঃ
- বিড়াল কামড় দিলে আপনার জলাতঙ্ক হতে পারে।
- বিড়ালের কামড় থেকে ধনুষ্টংকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- বিড়ালের কামড় থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ ও ছড়াতে পারে।
- ফ্র্যাকচার অথবা মারাত্মক গভীর ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- যে সকল মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে পাস্তরেলা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- বিড়ালের কামড় যদি জোরে হয় তাহলে রক্তনালী অথবা স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে।
বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
জলাতঙ্ক এক ধরনের ভয়ংকর। এই রোগ প্রাণঘাতী রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে কিছুদিনের
মধ্যেই পশু মৃত্যুবরণ করে। জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস বহন করে শিয়াল, বাদুর ইঁদুর এর
মত প্রাণী। এ সকল প্রাণী যখন বিড়াল অথবা কুকুরকে কামড় দেয় তখন তাদের দ্বারা
বিড়াল এবং কুকুরের মাঝেও জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে পড়ে। আর কুকুর অথবা বিড়াল
জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হলে তাদের আচড় অথবা কামড় থেকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে
জলাতঙ্ক রোগ।
জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর দুই থেকে ছয় সপ্তাহে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ
পায়। আর আস্তে আস্তে এই লক্ষণগুলো আরো বেশি হয়। কোন বিড়াল যদি জলাতঙ্ক রোগে
আক্রান্ত হয় এবং তার চিকিৎসা না করানো হয় তাহলে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই
সেই বিড়ালটি মারা যায়। বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ গুলো আলোচনা করলামঃ
- মুখ দিয়ে লালা ঝরবে
- দ্রুত এবং জোরে জোরে শ্বাস নেবে।
- আচরণের পরিবর্তন আসবে পাগলের মত ব্যবহার করবে।
- জ্বর আসবে অথবা প্যারালাইসিস হয়ে যাবে।
- বিড়ালটি হিংস্র হয়ে যাবে কামড় দিতে আসবে অথবা আঁচড়াতে আসবে।
- বিড়ালটি অনেক ভয় পাবে এবং পানি খাওয়া বন্ধ করে দিবে।
বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার
আপনার পোষা বিড়ালের যদি আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তাহলে প্রথমেই ভালোভাবে
লক্ষ্য করুন আপনার বিড়ালের ভেতর কি জলাতঙ্কের লক্ষণগুলো প্রকাশ পাচ্ছে। যদি
আপনার পোষা বিড়ালটির মাঝে জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণগুলো দেখতে পান তাহলে যত দ্রুত
সম্ভব বিড়ালটিকে চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে। কারণ জলাতঙ্ক এমন এক ধরনের
ভয়ংকর রোগ যার কারণে আপনার পোষা বিড়ালটি মৃত্যুবরণ করতে পারে।
বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার বলতে রয়েছে রেবিস ভ্যাকসিন। শুধুমাত্র এই
ভ্যাকসিন দ্বারা বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগ প্রতিকার করা সম্ভব। তাই আপনার বিড়ালটিকে
এই ভ্যাকসিন দিয়ে জলাতঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন। এখন সকল পশু চিকিৎসকের
নিকট এই ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। আপনার পোষা বিড়ালটি জলাতঙ্কে আক্রান্ত না হলেও
আপনি এই ভ্যাকসিন দিয়ে রাখতে পারেন।
বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় - বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণঃলেখকের মন্তব্য
আশা করছি আপনারা বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় - বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
আর্টিকেলটি পড়ে বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি হয় ও বিড়াল কামড় দিলে কি ক্ষতি হয়
তাছাড়াও বিড়ালের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সঠিক ধারনা পেয়েছেন।
তাই বিড়ালে আঁচড়ালে অথবা কামড়ালে অসাবধানতা নয় সতর্ক হন।পালিত পশু পাখির ক্ষেত্রে
অধিক যত্নবান হন এবং ভালোবাসুন।
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url