মিনিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়
মেয়েদের তলপেটে ব্যথা কিসের লক্ষণ জানুনআপনি কি প্রথম প্রথম পিল খাওয়া শুরু করেছেন। পিল সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই।
যদি এমনটা হয় তাহলে মিনিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় এই আর্টিকেলটি
পড়ুন। মিনিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় এই আর্টিকেলে তুলে ধরার চেষ্টা
করেছি কোন পিল সবচেয়ে ভালো এবং মিনিকন পিল খাওয়ার নিয়ম। মিনিকন পিল খাওয়ার
কতদিন পর মাসিক হয় আর্টিকেলটি পড়ে পিল সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন।
পিল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা
করছি আপনারা আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে পাবেন।
কোন পিল সবচেয়ে ভালো
প্রবাদ বাক্য আছে '' দুইটির বেশি আর নয় একটি হলে ভালো হয়''। এখনকার মানুষ আগের
থেকে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন রকম জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
অবলম্বন করছে। আর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে সবথেকে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে পিল
খাওয়া। এখনকার বেশিরভাগ মহিলা জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন ধরনের পিল খেয়ে
থাকে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির পিল পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ মেয়েদের হরমোনের সমস্যা বোঝার উপায় জেনে নিন
যেহেতু বাজারে অনেক ধরনের পিল পাওয়া যায় তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে কোন পিল
সবচেয়ে ভালো। কোন একটি নির্দিষ্ট পিল ভালো এই কথাটা বললে ভুল হবে। কারণ সবার
কাছেই একই পিল কখনো ভালো নাও হতে পারে। একেকজনের জন্য একেক পিল ভালো হয়। সকলের
ক্ষেত্রে সব পিল শুট করে না।
আর সেই কারণে বিভিন্ন ধরনের সাইড ইফেক্ট দেখা দিয়ে থাকে। আসলেই বলতে গেলে
প্রতিটি পিলের কিছু না কিছু সাইড ইফেক্ট থাকে। তাই পিল খাওয়ার পর দেখতে হবে কোন
পিল আপনার উপর শুট করছে। পিল খাওয়ার পর যদি কোনরকম সাইড ইফেক্ট দেখা দেয় তাহলে
সেই পিল পরিবর্তন করে অন্য পিল খাওয়া শুরু করুন।
আর যেই পিল আপনার উপর শুট করবে সেই পিল আপনার জন্য ভালো। অনেকের মনেই প্রশ্ন
থাকতে পারে বাজারের কোন পিল সবচেয়ে ভালো। তাই তাদের সুবিধার জন্য ভালো মানের
পিলের নাম আলোচনা করলাম।
- অভোস্টাট গোল্ড পিল
- মারভেলন পিল
- মিনিকন পিল
- নরেট২৮
- রোজেন
- ফেমিকন পিল
জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে শুধুমাত্র পিল খেলেই হবে না। পিল খেতে হবে সঠিক নিয়মে।
তাহলেই এর কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যাবে। তাই অবশ্যই পিল খাওয়ার পূর্বে পিল
খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। তা না হলে পিল খাওয়ার পরেও এর
কার্যকারিতা দেখা যাবে না এবং বিভিন্ন রকম সাইড ইফেক্ট দেখা দেবে।
মিনিকন পিল কি
আপনি যদি মিনিকন পিল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন।
মিনিকন পিল হচ্ছে এক ধরনের স্বল্প মেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি। যে সকল দম্পতি
স্বল্প সময়ের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি খুঁজছেন তাদের জন্য এটি সবচেয়ে ভালো
একটি পিল। কোন মহিলা যদি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে তার জন্য সকল পিল
খাওয়া ঠিক নয়।
আরও পড়ুনঃ মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার জানুন
কারণ কিছু কিছু পিল রয়েছে যে সকল পিল খাওয়ার কারণে বুকের দুধ অনেকটা কমে যায়।
কিন্তু মিনিকন পিল খাওয়ার ফলে সে রকম কোন সমস্যা হয় না। সেই কারণে নবজাতক শিশুর
মা নিঃসন্দেহে এই পিল খেতে পারেন। আপনি যদি অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ করতে চান
তাহলে এই পিল নিয়মিত খেতে হবে।
মিনিকন পিল খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই রয়েছেন যারা পিল খান কিন্তু সঠিক নিয়মে খান না। আর সেই কারণে বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাই আপনি যদি পিল খাওয়া শুরু করেন তাহলে অবশ্যই
নিয়মিত এবং সঠিক নিয়মেই পিল খেতে হবে।
তা না হলে আপনি এর কার্যকারিতা দেখতে পাবেন না। তাই অবশ্যই আপনি যদি পিল খাওয়া
শুরু করেন তাহলে প্রতিদিন এবং সঠিক নিয়মে খান। আপনাদের সুবিধার জন্য মিনিকন পিল
খাওয়ার নিয়ম আলোচনা করলাম।
- একটি প্যাকেটে সর্বমোট ২৮ টি ট্যাবলেট দেওয়া থাকে।
- ২৮ টি পিলের ভেতরে ৭ টি থাকে খয়রি রঙের পিল যেগুলোকে আয়রনের পিল বলা হয়ে থাকে।
- আর ২৮ টি পিলের ভেতর ২১ টি পিল থাকে সাদা রঙের।
- পিল খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে প্রতিদিন রাত্রে খাবারের পর খেতে হবে।
- সাদা রংয়ের পিল দিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে।
- ২১ দিনে ২১ টি সাদা রংয়ের পিল গুলো খেতে হবে।
- যখন ২১ টি পিল শেষ হয়ে যাবে তখন এক সপ্তাহ সেই বিল খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
- ২১ টি পিল খাওয়া শেষে ২/৩ দিনেই পিরিয়ড শুরু হয়ে যাবে।
- যদি ২/৩ দিন পরেও পিরিয়ড না শুরু হয় তাহলে আপনাকে খয়েরি রঙের পিল গুলো খেতে হবে।
- খয়েরী রঙের পিল খাওয়ার সময় পিরিয়ড হয়ে যাবে।
- আর যদি না হয় তাহলে নিকটবর্তী চিকিৎসকের নিকট গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
- খয়েরী রং এর পিল খাওয়া কালীন সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
মিনিকন পিল খেলে কি মোটা হয়
মহিলাদের মনে একটি মারাত্মক ভুল ধারণা রয়েছে যেটি হচ্ছে পিল খাওয়ার কারণে সে
মোটা হয়ে যাচ্ছে। এমন অনেক মহিলাই রয়েছেন যারা বলেন যে তিনি পিল খাওয়ার জন্যই
দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছে। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। পিল খাওয়ার কারণেই যে আপনি
মোটা হয়ে যাচ্ছেন সেটি যদি আপনি মনে করেন তাহলে আপনি ভুল মনে করছেন।
কারণ পিল খাওয়ার পরে কিছু কিছু মহিলার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে কিছুটা ওজন
বেড়ে গেছে কিন্তু সেটি দীর্ঘ স্থায়ী নয়। কিছু কিছু পিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
হিসেবে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে সেটি দুই থেকে তিন মাস এর জন্যই। যদি আপনার
পিল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধি পায় তাহলে দুই থেকে দুই থেকে তিন মাস পর ওজন কমে
যাই।
পিল খাওয়ার কারণে এ ধরনের ওজন বৃদ্ধি পায় কারণ শরীরের তরল ধরে রাখে। তাই একটা
সময় পর এ ধরনের ওজন কমে যায়। পিল খাওয়ার কারণে অতিরিক্ত চর্বির দ্বারা ওজন
বৃদ্ধি পাচ্ছে এটি ভাবা একেবারেই ভুল ধারণা। বিভিন্ন রকম গবেষণা করে দেখা গেছে যে
পিল খাওয়ার সাথে ওজন বৃদ্ধির কোন সম্পর্ক নেই।
বাজারে যে সকল বিল পাওয়া যায় সেসকল পিলে ইস্ট্রোজেন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর
সেই কারণেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে কিছুটা ওজন বৃদ্ধি
পেতে দেখা যায়। আমাদের দেশে পূর্বে যে সকল পিল পাওয়া যেত সে সকল পিলে
ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টিন হরমোন অনেক বেশি ব্যবহার করা হতো যার ফলে পূর্বে পিল
খেয়ে ওজন বৃদ্ধির মত সমস্যা দেখা দিত।
কিন্তু এখন বাজারে যে সকল পিল পাওয়া যায় তাতে এই ধরনের হরমোনের পরিমাণ অনেকটা
কম দেওয়া থাকে। তাই ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও কম থাকে। পিল খাওয়ার পরে যদি আপনার
অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পায় তাহলে সেটি আপনার পিল খাওয়ার কারণে নয় অন্য কোন
কারণে। নিকটবর্তী চিকিৎসকের নিকট গিয়ে তার পরামর্শ নিন।
মিনিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না মিনিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়। মিনিকন
পিল একটি প্যাকেটে ২৮ টি পিল থাকে। তার মধ্যে ২১ টি সাদা রংএর এবং ৭ টি খয়েরি
রঙের। যেগুলো খয়েরি সেগুলোকে আয়রনের পিল বলা হয়ে থাকে। ২১ টি পিল খাওয়া শেষ
করতে হয় ২১ দিনে।
২১ টি পিল শেষ করার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই মাসিক শুরু হয়। অনেকের ক্ষেত্রে
কয়েক দিন পর মাসিক দেখা দেয়। দুই থেকে তিন দিন পর যদি মাসিক দেখা না দেয় তাহলে
খয়েরি রঙের আয়রনের পিলগুলো খাওয়া শুরু করতে হয়। আয়রনের পিলগুলো খাওয়াকালীন
সময়েই মাসিক দেখা দেয়।
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ
অনেকেই প্রশ্ন করেন যে পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ কি। পিল খাওয়া হয়ে
থাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের পিল পাওয়া যাচ্ছে।
বিভিন্ন পিলের বিভিন্ন রকম সাইড ইফেক্ট রয়েছে। সে সকল সাইড ইফেক্ট এর কারণে অনেক
সময় বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
পিল খাওয়ার প্রধান কারণ অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ। কিন্তু এটি যে সবসময়ই ১০০%
কার্যকারী নাও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পিল খাওয়ার পরেও গর্ভধারণ হতে পারে।
তাই পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ হতে পারে গর্ভধারণ। যদি মাসিক না হয়
তাহলে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে পারেন। এছাড়াও অনেক সময় পিল খাওয়ার কারণে
মাসিকের সময় কিছুদিন পিছিয়ে যেতে পারে।
কিন্তু পিছিয়ে গেলেও কিছুদিন পরে মাসিক হয়। তাই পিল খাওয়ার পর যদি মাসিক না
হয় তাহলে কিছুদিন অপেক্ষা করে দেখতে হবে। আবার অনেক সময় বিভিন্ন রকম শারীরিক
সমস্যার কারণেও মাসিক বন্ধ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে
গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
হঠাৎ পিল খাওয়া বন্ধ করলে কি হয়
পিল খাওয়া হয় অকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ করার জন্য। পিল খাওয়া শুরু করলে
প্রতিদিন নিয়ম করে পিল খেতে হয়। তা না হলে এর কার্যকারিতা ঠিক থাকে না। অনেকেই
রয়েছেন পিল খাওয়া শুরু করেন ঠিকই কিন্তু কিছু সময় যাওয়ার পর পিল খাওয়া বন্ধ
করে দেয়।
কোন মহিলা যদি হঠাৎ পিল খাওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে তার বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা
দিতে পারে। আপনাদের সামনে এখন তুলে ধরার চেষ্টা করব হঠাৎ পিল খাওয়া বন্ধ করলে কি
হয়। পিল খাওয়া বন্ধ করলে যে সকল সমস্যাগুলো দেখা দেয় তা হলোঃ
- গর্ভধারণ হওয়া
- অতিরিক্ত ব্রণ অথবা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে
- হঠাৎ ওজনের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে
- অতিরিক্ত মাসিক এবং তার সাথে পেটের ব্যথা হতে পারে
- স্তনের আকার ছোট হতে পারে
একজন মহিলা হঠাৎ করে পিল খাওয়া বন্ধ করলে উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো দেখা দেয়।
যদি আপনি পিল খাওয়া বন্ধ করার পর এ ধরনের সমস্যায় পড়েন তাহলে চিন্তিত না হয়ে
একজন ভালো গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
আশা করছি আপনারা মিনিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় আর্টিকেলটি পড়ে আপনার
প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে পেয়েছেন। আপনি যদি মনে করেন পিল খাওয়া শুরু করবেন
তাহলে অবশ্যই প্রথমে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী পিল
খাওয়া শুরু করুন।
এতে করে আপনি আপনার জন্য কোন পিল ভালো বুঝতে পারবেন। এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে
আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। আমরা আপনাদের সুবিধার জন্য সকল ধরনের
তথ্য দিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করেছি।
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url