নখের পচন রোধের উপায় যেগুলো সবথেকে বেশি কার্যকরী জেনে নিন

রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুনআপনার কি নখের চারপাশে কালো হয়ে আছে? এটি আপনার নখের পচনের লক্ষণ নয়তো। যদি এমনটা হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে নখের পচন রোধের উপায় গুলো জানতে হবে। আর এই সম্পর্কে জানতে আমার লেখা নখের পচন রোধের উপায় আর্টিকেলটি পড়ুন। আমি নখের পচন রোধের উপায় আর্টিকেলে নখ পরিষ্কার করার উপায় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছি।
নখের পচন রোধের উপায়
যে সকল উপায় অবলম্বন করলে আপনার নখের সকল ধরনের সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করতে পারবেন। নখের সমস্যার সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

নখ মরে গেলে করণীয়

মানুষের শরীরের প্রতিটি অংশ যেন খুব যত্ন সহকারে বানানো হয়েছে। আমাদের শরীরের প্রতিটি অংশ দেখতে খুব সুন্দর। ঠিক তেমন আমাদের নখ ও দেখতে অনেক সুন্দর। আমাদের নখ দেখতে হালকা গোলাপি বর্ণের। তাছাড়াও আমাদের হাত ও পায়ের নখ হয় মসৃণ। আমাদের নখের ভেতর কোনরকম গর্ত কিংবা খাদ থাকে না। 
আর যদি আমাদের নখ গোলাপি বর্ণের না হয়ে আমাদের নখে কোনরকম দাগ অথবা ফ্যাকাসে বর্ণের হয় তাহলে বুঝতে হবে আমাদের নখে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রকম নখের সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যা হচ্ছে নখ মরে যাওয়া। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের নখ এর রং কালো হয়ে আস্তে আস্তে মরে যাচ্ছে। 

এরকম হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে নখে আঘাত পাওয়া। কোন কারণে যদি নখে আঘাত লাগে তাহলে সেই স্থান কাল রংয়ের হয় এবং মরে যাই। ধীরে ধীরে লক্ষ্য করা যায় সেই নখ পুরোটা মরে যায় এবং উঠে যাই। আপনারও যদি এমন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই সেই নখের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নখ পরিষ্কার করার উপায়

আমরা আমাদের মুখের ও চুলের যত্নের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন। আমরা সবসময়ই আমাদের মুখের ও চুলের যত্ন নিয়ে থাকি। কিন্তু নখের বেলায় দেখা যায় যতসব অবহেলা। নখের যত্নের ক্ষেত্রে আমরা তেমন একটা গুরুত্ব দেই না। কারণ আমরা মনে করি নখের যত্ন নেয়ার আবার কি আছে। 
কিন্তু আপনি কি জানেন প্রতিটি জিনিসের যত্নের প্রয়োজন হয়। সেটি মুখ হোক কিংবা চুল অথবা নখ। যত্ন ছাড়া কোন কিছুই ভালো থাকে না। তাই বেশিরভাগ মানুষের দেখা যায় হাতের ও পায়ের নখের রং পরিবর্তন হয়ে যায়। আবার কখনো কখনো নখে দেখা দেয় বিভিন্ন রকম সমস্যা। 

সেই সকল সমস্যা যেন না হয় তাই অবশ্যই হাত ও পায়ের নখের যত্ন নিতে হবে। আমরা সকলেই চাই আমাদের হাতের ও পায়ের নখ যেন চকচকে ও সুন্দর থাকে। আপনি যদি এমনটা চান তাহলে নখ পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত। আমি আপনাদের সামনে নখ পরিষ্কার করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করলাম।

কমলা লেবুঃ আমাদের নখ পরিষ্কার ও ঝকঝকে করতে কমলা লেবুর ভূমিকা অনেক বেশি। কমলালেবু ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার নখ করে তুলতে পারবেন সুন্দর। কমলা লেবু ও ডিমের সাদা অংশ এই দুটি উপাদান একসাথে মিশিয়ে আপনি যদি আপনার নখ পরিষ্কার করেন তাহলে আপনার নখ সকলের নজর কাড়বে।

লেবুর রসঃ নখ পরিষ্কার ও ঝকঝকে করার আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে লেবুর রস ও বেসন দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এবার এই পেস্ট কিছুক্ষণ আপনার নখে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর ঘষে আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার নখ আগের থেকে অনেক বেশি সাদা ও পরিষ্কার হয়ে গেছে।

টমেটোর রসঃ বিভিন্ন রকম সবজি রয়েছে যে সকল সবজি কাটার কারণে হাত ও নখে কষ লেগে কালো হয়ে যায়। যখন এমনটা হবে তখন অবশ্যই টমেটোর কেটে টমেটো রস ভালোভাবে হাতে ও নখে লাগাতে হবে। এতে করে হাতের ও নখের কালো ভাব খুব সহজেই উঠে যাবে এবং নখ সুন্দর দেখাবে।

শ্যাম্পুঃ আপনার নখ ঝকঝকে ও পরিষ্কার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে শ্যাম্পু। হালকা কুসুম গরম পানিতে কিছুটা পরিমাণ শ্যাম্পু মিশিয়ে সেই পানির ভিতর আপনার হাত ও পায়ের নখ কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর ব্রাশ দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। দেখবেন আপনার নখ অনেক বেশি পরিষ্কার হয়ে গেছে।

টুথপেস্টঃ টুথপেস্ট শুধুমাত্র আমাদের দাঁত ঝকঝকে ও পরিষ্কার করে তা কিন্তু নয়। টুথপেস্ট আমাদের নখ ঝকঝকে ও পরিষ্কার করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। নিয়মিত যদি আপনার নখ টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করেন তাহলে আপনার নখ অনেক বেশি পরিষ্কার দেখাবে।
বেকিং সোডাঃ আমাদের নখ পরিষ্কার করতে কার্যকরী উপাদান হচ্ছে বেকিং সোডা। বেকিং সোডার সাথে হালকা কুসুম গরম পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এবার এই পেস্ট কিছুক্ষণ আপনার নখে লাগিয়ে রাখুন। এবার ভালোভাবে বেকিং সোডা পরিষ্কার করে নিন। নিজের নখের পরিবর্তন নিজেই দেখতে পাবেন।

অলিভ অয়েলঃ প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল দিয়ে আপনার নখ মালিশ করতে পারেন। এতে করে আপনার নখ অনেক বেশি সুন্দর ও মজবুত হবে। এছাড়াও অলিভ অয়েলের পরিবর্তে পেট্রোলিয়াম জেলি ও ব্যবহার করতে পারেন।

নখের পচন রোধের উপায়

নখের পচন এটি যেন আমাদের কাছে একটি বিরক্তিকর বিষয়। নখের পচন দেখা দিলে আমরা অনেকটা অসস্তিবোধ করি মানুষের সামনে যেতে। কিন্তু আপনি কি জানেন নখের পচনের মূল কারণ হচ্ছে আপনি নিজে। আপনি যদি আপনার নখের যত্ন না নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার নখের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিবে। 

নখের বিভিন্ন রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই নিয়মিত মুখ ও চুলের মতো নখের ও যত্ন নিতে হবে। আপনার যদি নখের পচন দেখা দেয় তাহলে চিন্তিত না হয়ে নিচের অংশ পড়ুন। আমি আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে নখের পচন রোধের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করলাম।

মাউথ ওয়াশঃ মাউথ ওয়াশ ছত্রাক ধ্বংস করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। কারণ মাউথ ওয়াশে ব্যবহার করা হয় এক ধরনের অ্যালকোহল যা খুব সহজেই যেকোনো ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ধ্বংস করে থাকে। একটি পাত্রে মাউথ ওয়াশ দিন এবার সেই মাউথ ওয়াশে ৩০ মিনিট মতো পা ঢুকিয়ে রাখুন। তারপর পা বের করে নখ পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন এরকম করলে আপনার নখের পচনের পরিবর্তন দেখতে পাবেন। যতদিন ভালো না হচ্ছে এভাবে করুন।

হলুদঃ হলুদ কে এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক বলা হয়ে থাকে। তাই আপনি আপনার নখের পচন রোধের ক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। কয়েক টুকরো করুন কেটে নিয়ে সেই হলুদ টুকরো অলিভ অয়েলের ভেতর দিতে হবে। দুটি উপাদান একসাথে ভালোভাবে গরম করতে হবে। এবার এই তেল এর সাথে কিছুটা পরিমাণ জল মিশিয়ে নখে লাগাতে হবে।

বেকিং সোডাঃ বেকিং সোডা আপনার নখের পচন রোধ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। একটি পাত্রে কিছুটা পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে এবার সামান্য পরিমাণ কুসুম গরম পানি দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এবার এটি নখের যে স্থানে পচন ধরেছে সেখানে লাগান। কিছুদিন এরকম করলে আপনি খুব ভালো রেজাল্ট পাবেন।

নারিকেল তেলঃ নারিকেল তেল নখের পচন রোধে অনেক বেশি সাহায্য করে। নারিকেল তেলে উপস্থিত ফ্যাটি এসিড নখের ভেতর থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই নখের পচন রোধ করতে প্রতিদিন দুইবার আক্রান্ত স্থানে নারিকেল তেল ব্যবহার করুন।

হাতের নখের ইনফেকশনের ঔষধ

হাতের নখের ইনফেকশন হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে নখের যত্ন না নেওয়া। তাই যদি আপনার নখের কোনরকম সমস্যা দেখা দেয় আপনাকে আপনার নখের প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হতে হবে। নখ ভালো রাখার জন্য যে সকল কাজ করা দরকার সে সকল কাজ করতে হবে। 

কারণ আমাদের নখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়া প্রধান কারণ হচ্ছে নখের যত্ন না নেওয়া। আপনার যদি হাতের নখে ইনফেকশন দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ ইনফেকশন এর পরিমাণ যদি বেড়ে যায় তাহলে এটি আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। 

আমি এখন দুইটি মলম এর নাম বলবো। আপনি যদি কোনও কারণে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগ না পান তাহলে এই দুটো মলমের মধ্যে যেকোনো একটি আপনার নখের ইনফেকশনের উপর ব্যবহার করতে পারেন।
  • টাভাবোরোল (কেরিডিন)
  • ইফিনাকোনাজোল (জুবলিয়া)
ব্যবহারবিধিঃ আপনার ইনফেকশন কৃত স্থান ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। এবার ইনফেকশন কৃতস্থান শুকিয়ে নিন। এবার ওই স্থান ভালোভাবে ঘষে সেখানে মলম লাগান।

নখের গোঁড়া ফুলে যাওয়ার ঔষধ

নখের গোঁড়া খুলে যাওয়া যাকে এক কথায় বলা হয়ে থাকে নখকুনি। এই সমস্যা মাঝে মাঝেই আমাদের হাতের অথবা পায়ের নখে দেখা যায়। এই সমস্যার কারণে আমাদের নখের চারপাশ ফুলে যায় প্রচণ্ড পরিমাণে ব্যথা করে। আবার অনেক সময় পুঁজ জমা হয়। 

এরকম সমস্যা দেখা দিলে বেশিক্ষণ পানিতে সেই স্থান ভিজিয়ে রাখা যাবে না। পানির কাজ করার পরপর পা অথবা হাত ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। যদি পুঁজ জমা থাকে তাহলে এবসেস ড্রেইন এর সাহায্যে পুঁজ বের করতে হবে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। 

যদি এটির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ফাংগাল ইনফেকশন হয় তাহলে এন্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। যেমনঃ dermasin solution নখের চারপাশে দুই ফোঁটা ব্যবহার করতে হবে। এটি দিনে দুইবার ব্যবহার করতে হবে এবং ফাঙ্গাল রোধী ক্যাপসুল খেতে হবে। যদি এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

আশা করছি আমার লেখা আর্টিকেলটি পড়ে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে পেয়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন নখের পচন রোধের উপায় গুলো কি কি। আমি এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই দ্যা বর্ষা ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন এবং নিয়মিত আমার লেখা আর্টিকেল গুলো পড়ুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url