ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা জেনে নিন
নবজাতকের খিচুনি হলে সমস্যা জেনে নিনআপনাদের বাচ্চা কি সারাদিন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে? আর আপনি সেটাকে খুব একটা
গুরুত্ব দেন না। যদি এমনটা হয় তাহলে আজকে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
সম্পর্কে জেনে এখনই সচেতন হন। আমার লেখা ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
আর্টিকেল পড়ে এর কুফল গুলো জেনে সাবধান হন। ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
আর্টিকেলে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা এর কুফল সম্পর্কে বুঝতে পারবেন এবং এখন থেকেই
আপনার বাচ্চার মোবাইল দেখার উপর কন্ট্রোল আনবেন।
মোবাইল ফোন
মোবাইল ফোন এই শব্দটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। আমাদের জীবন যাত্রায় এটি নিত্য
দিনের সঙ্গী। প্রতিটি মানুষের কাছে এখন মোবাইল ফোন দেখা যায়। মোবাইল ফোন আসলে
কি। মোবাইলে ফোন হচ্ছে এক ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা যা শব্দ তরঙ্গের দ্বারা একজন
ব্যক্তির সাথে আরেকজন ব্যক্তির একটি দেশের সাথে আরেকটি দেশের যোগাযোগ করিয়ে
থাকে।
প্রথমদিকে টেলিফোন ব্যবহার করা হতো যা তারের সাহায্যে সংযোগ করা ছিল। একজন
ব্যক্তির সাথে আর একজন ব্যক্তির যোগাযোগ করা যেত। কিন্তু এক দেশের মানুষের সাথে
অন্য দেশের মানুষের যোগাযোগ এর ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হতো। আস্তে আস্তে আবিষ্কার
করা হয় মোবাইল ফোন। যা কোনরকম তার ছাড়াই একটির সাথে আরেকটি সংযোগ হয়ে
থাকে।
আরও পড়ুনঃ নবজাতকের চোখ দিয়ে পানি পড়ার কারণ জানুন
আর সেই কারণে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে খুব সহজেই যোগাযোগ করা সম্ভব
হচ্ছে। মোবাইল ফোন কে আরও কিছু নাম দেওয়া হয়েছে যেমন হ্যান্ড ফোন, মুঠো ফোন,
সেল ফোন। মোবাইল ফোন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব সহজেই পরিবহন করা যায়।
মোবাইল ফোন এখন অনেক উন্নত হয়েছে। মোবাইল ফোন শুধুমাত্র কথা বলার মধ্যেই
সীমাবদ্ধ নেই।
কথা বলা ছাড়া এসএমএস, এমএমএস, ইন্টারনেট,গেম, ক্যামেরা, ভিডিও ইত্যাদি ধরনের আরও অনেক ফিচার রয়েছে। যা মানুষের জীবন ব্যবস্থাকে করে তুলেছে অনেক সহজ ও উন্নত।
মোবাইল ফোনের ভেতর অনেক ধরনের উন্নত ফিচার থাকার কারণে মোবাইল ফোনকে স্মার্টফোন ও
বলা হয়ে থাকে। মোবাইল ফোন এমন একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র যা মানুষের জীবনের সাথে
ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে।
মোবাইল ফোন কে আবিষ্কার করে
মোবাইল ফোন সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশি অনেক কিছুই জানি। মোবাইল ফোন কি কি কাজে
ব্যবহৃত হয় অথবা এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো আমরা জানি। আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহৃত
মোবাইল ফোনের আবিষ্কার কে করেছেন সেই কথা কয় জন বা জানে। আপনিও যদি মোবাইল ফোন
কে আবিষ্কার করে এটি না জেনে থাকেন তাহলে আজকে আমি আপনাদের জানাবো মোবাইল ফোন কে
আবিষ্কার করেন।
মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেন নিউইয়র্ক শহরের ইঞ্জিনিয়ার ড. মার্কিন কুপার। মোবাইল
ফোন আবিষ্কার করা হয় ১৯৭৩ সালে। মার্কিন কুপার কে বলা হয় মোবাইল ফোনের জনক। যখন
মোবাইল ফোন আবিষ্কার করা হয় তখন মার্কিন কুপার একটি টেলিকম কোম্পানিতে মটোরোলাই
কাজে নিয়োগ ছিলেন।
যখন প্রথম হাতে ধরা মোবাইল ফোন আবিষ্কার করা হয় তখন সেটির ওজন ছিল ২ কেজি। তারপর
আস্তে আস্তে এটি উন্নত করে মুঠোফোনে পরিণত করা হয়। ১৯৭৩ সালে মোবাইল ফোন
আবিষ্কার করা হলেও এটি প্রথম বাণিজ্যিক বাজারে আসে ১৯৮৩ সালে। প্রথম বাজারে যেই
মোবাইল ফোন আসে সেটির নাম ছিল ডায়না টিএসি ৮০০০ এক্স।
কোন মোবাইল সবচেয়ে ভালো ২০২৩
এখন বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল দেখা যায়। যে সকল মোবাইল এর মাঝে রয়েছে
বিভিন্ন রকমের ফিচার। সেই কারণে মোবাইল ফোনকে স্মার্টফোনও বলা হয়ে থাকে। আপনাদের
সামনে কোন মোবাইল সবচেয়ে ভালো ২০২৩ সালে তা আলোচনা করলাম।
- Iphone 14 pro
- Iphone 13 pro
- Vivo X80 pro
- Google Pixel 7 pro
- Oppo Find X5 pro
- Samsung Galaxy S22 Ultra
- Samsung Galaxy Z Flip 4
- OnePlus 10 pro
- Xiaomi 12T Pro
- Asus Zenfone 9
মোবাইল ফোনের উপকারিতা
মোবাইল ফোন আমাদের জীবনযাত্রাকে করে তুলেছে অনেক বেশি উন্নত এবং দ্রুত। প্রতিটি
কাজের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের অবদান অনেক বেশি। কোন কিছু খোঁজা থেকে শুরু করে কোন
কিছু কেনা অথবা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় তথ্য দিয়ে পাঠানো এবং দেশের এক
প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষের সাথে যোগাযোগ সকল ক্ষেত্রেই মোবাইলের অবদান
অনেক বেশি।
ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বলা হোক কিংবা ব্যবসায়ী অথবা চাকুরীজীবী সকল ক্ষেত্রেই আমরা
মোবাইলের ভূমিকা দেখতে পাই। প্রতিটি ঘরে ঘরে মোবাইল ফোনের ব্যবহার লক্ষ্য করা
যায়। আর এটি সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করা
যায়। আমি এখন আপনাদের সামনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলো আলোচনা করব।
আরও পড়ুনঃ শিশুর অপুষ্টি দূর করার উপায় জানুন
তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রেঃ যেকোনো তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে
মোবাইলের ভূমিকা অনেক বেশি। যে কোন তথ্য খুব দ্রুত এবং খুব সহজেই আপনি এক স্থান
থেকে অন্য স্থানে পাঠাতে পারবেন। আর এই সকল তথ্য গোপনীয় থাকে।
মোবাইল ফোনের সাহায্যে তথ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে সময় লাগে ৫ সেকেন্ড থেকে ১০
সেকেন্ড। যেকোনো তথ্য এসএমএস অথবা এমএমএস কিংবা যেকোনো তথ্যের ছবি তুলেও খুব
সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মোবাইল ফোনের দ্বারা পাঠানো সম্ভব।
তথ্য খোঁজার ক্ষেত্রেঃ তথ্য আদান-প্রদানের পাশাপাশি তথ্য খোঁজার ক্ষেত্রেও
মোবাইল ফোন এর অবদান লক্ষ্য করা যায়। দুনিয়ার যে কোন তথ্য খুব সহজেই মোবাইল
ফোনে গুগল ব্রাউজার এর সাহায্যে খুঁজে বের করা সম্ভব। মানুষ যে কোন বিষয়ে জানতে
চাইলে মোবাইলের সাহায্যে তা খুব সহজেই খুঁজে বের করতে পারে।
যোগাযোগের ক্ষেত্রেঃ যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ভূমিকা অনেক বেশি।
আগেকার সময়ে এক স্থানের মানুষের সাথে অন্য স্থানের মানুষের যোগাযোগ করতে চাইলে
অনেক ঘণ্টা, অনেকদিন অথবা অনেক সপ্তাহ সময় লেগে যেত। কিন্তু এখন মোবাইল ফোনের
সাহায্যে কয়েক মিনিটের মধ্যেই একই স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব সহজেই যোগাযোগ করা
সম্ভব হয়েছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রেঃ শিক্ষা ক্ষেত্রেও মোবাইলের উপকারিতা খুব সহজেই লক্ষ্য
করা যায়। মোবাইল ফোনের সাহায্যে স্টুডেন্টরা ঘরে বসেই সকল বিষয়ে খুব সহজেই
জ্ঞান অর্জন করতে পারছে। এছাড়াও মোবাইল ফোনের সাহায্যে এখন অনলাইন ভিত্তিক
ক্লাসের মাধ্যমেও শিক্ষকরা স্টুডেন্টদের বিভিন্ন রকম শিক্ষা প্রদান করছে।
যে কোন বিষয়ে সমস্যা হলে মোবাইল ফোনের সাহায্যে স্টুডেন্টরা খুব সহজেই সেই
সমস্যার সমাধান খুঁজে পাই। মোবাইল ফোন শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিবর্তন নিয়ে
আসতে সাহায্য করেছে।
ব্যবসার ক্ষেত্রেঃ এখনকার যুগ ডিজিটাল যুগ। এখনকার সময়ে বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায় মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনে ব্যবসা করছে। ব্যবসা করার
ক্ষেত্রে বাসার বাইরে যেতে হচ্ছে না। এটি সম্ভব হয়েছে মোবাইল ফোনের
সাহায্যে।
অনলাইনে ব্যবসা বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধা বয়ে নিয়ে এসেছে।
কারণ এখন মহিলারা ঘরে বসেই বিভিন্ন রকম অনলাইন ব্যবসা করে টাকা ইনকাম করছে এবং
তারা আত্মনির্ভরশীল হয়েছে।
ছবি তোলার ক্ষেত্রেঃ বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সুন্দর ছবি
তোলা হয়। বর্তমানে মোবাইলের যে ক্যামেরা ফিচার রয়েছে সেটি অনেক বেশি উন্নত।
ক্যামেরায় ছবি খুব সহজে এবং খুব সুন্দর ভাবে তোলা সম্ভব।
আগেকার সময়ে ছবি তোলার জন্য স্টুডিও যেতে হতো কিন্তু এখনকার সময়ে ছবি তোলার
জন্য আর স্টুডিওতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। নিজের হাতে থাকা মোবাইল ফোনে ছবি
তোলা সম্ভব। এই সুবিধা পেয়েছে মানুষ শুধুমাত্র মোবাইল ফোনের কারণে।
অডিও ও ভিডিও প্লেয়ারঃ এখনকার সময়ে যেকোনো অডিও কিছু শোনার জন্য অথবা
ভিডিও কিছু দেখার জন্য মোবাইল ফোন সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মোবাইল ফোনের
সাহায্যে মানুষ যখন যেখানে খুশি যেটা খুশি অডিও শুনতে পাই অথবা ভিডিও দেখতে পাই।
এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন অনেক বেশি অবদান রেখেছে।
লোকেশন খোঁজার ক্ষেত্রেঃ বর্তমানে মোবাইলে একটি ফিচার সেট করা হয়েছে
যেটির সাহায্যে খুব সহজেই লোকেশন খুঁজে বের করা সম্ভব। আমরা যদি কোন অপরিচিত
স্থানে যাই এবং সেই জায়গার কোন কিছু না চিনি তাহলে এই অ্যাপের সাহায্যে খুব
সহজেই আমাদের প্রয়োজনীয় স্থান আমরা খুঁজে বের করতে পারব।
গেমিং এর ক্ষেত্রেঃ আগেকার সময়ে গেম খেলা হত একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে
এবং একটি নির্দিষ্ট মনিটরে। কিন্তু মোবাইল ফোন এই ব্যবস্থাকে আরও বেশি উন্নত করতে
সাহায্য করেছে। মোবাইল ফোনের সাহায্যে আমরা যেখানে ইচ্ছা সেখানে বসে গেম খেলতে
পারি।
ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রেঃ ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে মোবাইলের অবদান অনেক বেশি
লক্ষ্য করা যায়। একটা সময় ছিল যখন অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে ব্যক্তিকে ব্যাংকে
গিয়ে টাকা জমা দিতে হতো। কিন্তু এটিকে অনেক বেশি সহজতরো করে তুলেছে মোবাইল ফোন।
কারণ মোবাইল ফোনের সাহায্যে ঘরে বসেই আপনি আপনার একাউন্টে টাকা জমা দিতে পারবেন।
বিল পেমেন্টঃ কারেন্ট বিল অথবা ওয়াইফাই বিল এছাড়াও বিভিন্ন বিল রয়েছে
যে সকল বিল ঘরে বসেই খুব সহজে মোবাইলের মাধ্যমে পেমেন্ট করা সম্ভব হচ্ছে। আর সেই
কারণে এ সকল কাজ মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে অনেক সহজ।
এছাড়াও আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে যেগুলো আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত
হয়ে পড়েছে। এখনকার সময়ে মোবাইল ফোন মানুষের জীবনের নিত্য এবং প্রয়োজনীয়
যন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রতিটি দিন প্রতিটি কাজ এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে
মানুষের জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা লক্ষ্য করা যাই।
মোবাইল ফোনের অপকারিতা
যেকোনো জিনিসের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে যেমন তার সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমন তার
রয়েছে অসুবিধা। আপনার ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে সেটি আপনার জন্য উপকারী নাকি
অপকারী। আপনি যদি কোন জিনিস সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অবশ্যই সেটি আপনার
জন্য হবে উপকারী।
কিন্তু সেই জিনিস যখন আপনি মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করবেন তখন সেটি আপনার ক্ষতির
কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক তেমন মোবাইল ফোন এর রয়েছে কিছু অপকারিতা। সেটি আপনার
ওপর নির্ভর করছে আপনি মোবাইল ফোন আপনার উপকারের জন্য ব্যবহার করবেন নাকি অপকারের
জন্য। নিচে আমি মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলো তুলে ধরলাম।
চোখের সমস্যা হওয়াঃ চোখে ঝাপসা দেখা অথবা চোখ জ্বালা করার প্রধান কারণ
হিসেবে বলা যায় অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার। যদি কোন ব্যক্তি অতিরিক্ত মোবাইল
ফোন ব্যবহার করে তাহলে সেই ব্যক্তির চোখের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি
বেড়ে যায়। তাই অবশ্যই মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন থাকতে
হবে।
কানের সমস্যা হওয়াঃ মোবাইল ফোনের আরেকটি অপকারিতা হচ্ছে কানের সমস্যা।
অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা অনলাইনে নাটক দেখে অথবা গান শুনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়
পার করে দেয়। শোনার জন্য কানে হেডফোন ব্যবহার করে থাকে। অধিক সময় ধরে কানে
হেডফোন ব্যবহার করে মোবাইল ব্যবহার করার কারণে কানের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
মাথা ব্যথাঃ অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার একটি ক্ষতিকর দিক হচ্ছে
মাথা ব্যথা। অতিরিক্ত মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থেকে ভিডিও দেখার কারণে অথবা গেম
খেলার কারণে মাথাব্যথা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ঘাড় ব্যথাঃ ঘাড় ব্যথা করা ভিডিও অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার একটি
ক্ষতিকর দিক। অনেক সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে ঘাড় ব্যথার মতো
সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
চিন্তা শক্তি লোপঃ যে সকল ব্যক্তি অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সে সকল
ব্যক্তির চিন্তাশক্তি কমে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। সে সকল ব্যক্তির মধ্যে
নতুন কিছু সৃষ্টি করার দক্ষতা অথবা নতুন কিছু নিয়ে কাজ করার দক্ষতা অনেকাংশে কমে
যায়।
মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়াঃ মোবাইল ফোনের আরেকটি অপকারিতা হচ্ছে মেজাজ
খিটখিটে হয়ে যাওয়া। যে সকল ব্যক্তি অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সেই সকল
ব্যক্তির এক সময় মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর সেই কারণে সেই ব্যক্তি যে
কোন কিছুর উপর মনোযোগ দিতে পারেনা এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
পর্ণ সাইডে আসক্ত হওয়াঃ এখনকার ইয়াং জেনারেশনের সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে
দাঁড়িয়েছে পর্ণ সাইডে আসক্ত হয়ে পড়া। ইয়াং জেনারেশন এর শিশুরা খুব সহজেই
হাতে মোবাইল পাওয়ার কারণে অল্প বয়সে পর্ণ সাইডে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যা তাদের
জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
অটিজমের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াঃ আমাদের দেশে অটিজম শিশুর সংখ্যা দিন দিন
বেড়েই চলেছে।। এর প্রধান কারণ হচ্ছে মোবাইল ফোন। কারণ মোবাইল ফোনের টাওয়ারে
রয়েছে এক ধরনের রেডিয়েশন। আর সেই রেডিয়েশনে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছে
গর্ভবতী মায়ের গর্ভে থাকা শিশু এবং কম বয়সী শিশু।
মনোযোগের অভাবঃ মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শিশুদের মাঝে মনোযোগের
অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিশুরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে পড়ালেখা কিংবা
অন্যান্য কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যাচ্ছে। যা তাদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর।
এছাড়াও মোবাইল ফোনের আরও অনেক অপকারিতা রয়েছে। আমি আপনাদের সামনে মোবাইল ফোনের
অপকারিতার কিছু অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। আশা করছি আপনারা উপরের অংশটুকু করে
বুঝতে পেরেছেন মোবাইল আমাদের জন্য কতটা অপকারি।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
আমাদের চারপাশে এখন ছাত্র জীবনে মোবাইলের ব্যবহার অনেক বেশি লক্ষ্য করা যায়।
অনেক সময় ধরে ছাত্ররা মোবাইল ব্যবহার করছে। এক কথায় বলা যায় যে ছাত্র-ছাত্রীরা
মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে। আর অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার ফলে দেখা দিচ্ছে
নানা রকমের সমস্যা। যে সকল সমস্যা ভবিষ্যতে ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে। তাই এখনই
অভিভাবকদের সতর্ক হওয়া উচিত।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করলামঃ
মোবাইল ফোন আমাদের জীবনে অনেক বেশি উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসলেও ছাত্র জীবনে মোবাইল
ফোনের উপকারিতার চাইতে অপকারিতা বেশি লক্ষণীয়। ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহার
করার খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। তাও এখনকার সময় ছাত্ররা দিনের বেশিরভাগ সময়
মোবাইলের পেছনে ব্যয় করছে। যা ভবিষ্যতে ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে।
মনোযোগের ক্ষতিঃ ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মনোযোগের ক্ষতি
দেখা দিচ্ছে। অতিরিক্ত মোবাইলের প্রতি আসক্ত হওয়ার কারণে কোন কিছুতে সঠিকভাবে
মনোযোগ দিতে পারছে না। পড়ালেখা থেকে শুরু করে অন্যান্য কারিকুলামে ছাত্রদের
মনোযোগ অনেকটা কম দেখা যাই।
চোখের ক্ষতিঃ ছাত্র জীবনে মোবাইল ব্যবহারের সবথেকে বড় ক্ষতিকর দিক হচ্ছে
চোখের ক্ষতি হওয়া। অতিরিক্ত মোবাইল দেখার কারণে চোখে ঝাপসা দেখা,চোখ জ্বালাপোড়া
করা সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
কানের সমস্যাঃ মোবাইল অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে কানের সমস্যা দেখা দেয়।
অনেক বাচ্চারা রয়েছে যারা দীর্ঘ সময় মোবাইলে ভিডিও দেখে অথবা গান শুনে। আর
দীর্ঘ সময় ধরে গান শোনার কারণে কানের সমস্যা দেখা দেয়।
ব্রেনের সমস্যা দেখা দেয়ঃ এক ধরনের গবেষণা করা হয়েছে ১২ থেকে ১৭ বছর
বয়সের কিশোর কিশোরীদের ওপর। এই গবেষণায় দেখা গেছে যে তাদের মস্তিষ্ক বিকাশের
বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে মোবাইল ফোন হতে বের হওয়া রেডিয়েশন। বলা যায় যে
অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ব্রেনের সমস্যা দিয়ে থাকে।
ঘুমের সমস্যাঃ অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইলের
প্রতি এতটা আসক্ত হয়ে পড়েছে অনেক রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। যার ইফেক্ট
পরে তাদের শরীরের উপর। রাত জেগে মোবাইল ব্যবহারের ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হয়
না। আর এই থেকে সৃষ্টি হয় ঘুমের সমস্যা।
পুষ্টির অভাবঃ অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা খাবার খাওয়ার সময় মোবাইল দেখে
থাকে। আর মোবাইল দেখে খাবার খাওয়ার কারণে খাবারের পুষ্টির চেয়ে মোবাইলের
রেডিয়েশন শরীরের ভেতর বেশি প্রবেশ করে। যার ফলে বাচ্চার শরীরে দেখা দেয় পুষ্টির
অভাব।
পর্ণ দেখার প্রতি আসক্তঃ একজন ছাত্র অপ্রাপ্তবয়স্ক। এই বয়সে ছেলেমেয়েরা
পর্ণ দেখার প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ে। আর সেই ক কারণে ভবিষ্যতে তারা
বিভিন্ন রকম ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এখনকার জেনারেশনের ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যবহারের
এটি সবথেকে বড় ক্ষতিকারক দিক হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
এ সকল অপকারিতা থেকে বাঁচার উপায়ঃ
- অনেক মা বাবা রয়েছে বাচ্চার পেছনে সময় দিতে চায় না। বাচ্চা কে মোবাইল দিয়ে নিজে কোন কাজে ব্যস্ত থাকেন। কখনোই এটি করা যাবেনা। অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে সময় দিতে হবে।
- অনেক বাচ্চা রয়েছে বাইরে খেলতে যেতে চাই না তার পরিবর্তে ঘরে এসে মোবাইলে গেম খেলতে পছন্দ করে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ছাত্র অবস্থায় বাইরে খেলার গুরুত্ব অনেক বেশি তাই অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে বাইরে খেলতে দিতে হবে। প্রয়োজন হলে অভিভাবকদের সেই বাচ্চাদের সাথে খেলা করতে হবে।
- স্মার্ট ফোন বুক পকেটে বা প্যান্টের পকেটে রাখার পরিবর্তে ব্যাগে রাখার চেষ্টা করুন।
- কিছু কিছু বাচ্চা রয়েছে যারা অবসর সময়ে মোবাইলে কার্টুন দেখে সময় পার করে। তাই আপনার বাচ্চাকে মোবাইলে কার্টুন দেখান পরিবর্তে বই পড়ানোর চেষ্টা করুন।
- খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাচ্চার হাতে মোবাইল দেবেন না।
শেষ কথা
আশা করছি আপনারা আমার আর্টিকেলটি পড়ে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। অবশ্যই সময় থাকতে সাবধান হন এবং আপনার
ছেলেমেয়েদের যতটা কম সম্ভব মোবাইল ব্যবহার করতে দিন। এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য
দিয়ে আমি নিয়মিত আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই দ্যা বর্ষা ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন
এবং নিয়মিত আমার লেখা আর্টিকেলগুলো পড়ুন।
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url