মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় কি জানুন এবং সতর্কতা অবলম্বন করুন

 

মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় সম্পর্কে কি আপনি জানেন। কিংবা আপনি কি স্ট্রোক হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে জানেন। যদি না জেনে থাকেন তাহলে মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমি এই আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় কি কি। মিনি স্ট্রোক কি সে সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
মিনি স্ট্রোক হলে করনীয়
আশা করছি আমার লেখা মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বুঝতে পারবেন মিনি স্ট্রোক এর লক্ষণ কি কি। আর একজন ব্যক্তির স্ট্রোক হলে আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে কি কি করবেন। সেহেতু স্ট্রোক সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে আর্টিকেলটি পুরো পড়ুন।

মিনি স্ট্রোক হলে করনীয়ঃ ভূমিকা

বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন রকম অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। এখনকার সময়ে বাংলাদেশের প্রধান অসুখ গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে স্ট্রোক। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন ব্যক্তি স্ট্রোক করছে। আমাদের জীবন যাপন ব্যবস্থা ও খাদ্যাভাস এর কারণে প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। 

 বিশ্বে প্রতিবছর১৩.৭ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতি ১০০০ মানুষের ভিতর ১২ জন মানুষ স্ট্রোক করছে।
এই স্ট্রোকের ফলে মানুষ পঙ্গুত্ব লাভ করছে আর না হলে মৃত্যুবরণ করছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কেন স্ট্রোক হয়। স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো কি। স্ট্রোক এর লক্ষণ দেখা দিলে প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের কি করা উচিত। এগুলো না জানার কারণে অনেক সময় স্ট্রোক আক্রান্ত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে থাকে। তাই আমাদের ভালোভাবে জানা উচিত স্ট্রোক সম্পর্কে।

স্ট্রোক কি

স্ট্রোক কি? তা কি আপনি জানেন। সাধারণ কথাই স্ট্রোক হচ্ছে, আমাদের মস্তিষ্কে কোনো কারণে রক্তের সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে রক্তের অভাবে কিছু ব্রেন টিস্যু মারা যাওয়া। স্ট্রোকের ফলে আমাদের মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর আমাদের মস্তিষ্কের কোষ গুলোর মৃত্যু ঘটে। 

এর ফলে আমাদের মস্তিষ্কের সাথে সাথে আমাদের শরীর ও নিথর হয়ে পড়ে। মস্তিষ্কের কিছু অংশ ভালোভাবে কাজ করে না। শরীরের কিছু কিছু অংশ নড়াচড়া করা বন্ধ হয়ে যায়। স্ট্রোক হওয়ার সাথে সাথেই কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশিত পাই। আর সেই লক্ষণগুলো ভালোভাবে খেয়াল করলেই বোঝা যায় যে একজন ব্যক্তি স্ট্রোক করেছে।

স্ট্রোক কত প্রকার

আপনাদের সামনে আলোচনা করতে যাচ্ছি স্ট্রোক কত প্রকার। স্ট্রোক সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে। আসুন এখন আমরা জেনে নেই স্ট্রোক গুলো কি কি।

১। ইস্কেমিক স্ট্রোকঃ স্ট্রোক এর মধ্যে ইস্কেমিক স্ট্রোক হচ্ছে অন্যতম। এই স্ট্রোকের ফলে মস্তিষ্কের রক্তবাহী পদার্থ জমাট বেঁধে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এই স্ট্রোকের ফলে মানুষের মস্তিষ্কের উপর বেশি আঘাত করে ফলে মস্তিষ্ক অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্ট্রোক হলে প্রায় ৮৫% এই স্ট্রোক হয়ে থাকে। এই স্ট্রোক সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

২। হেমোরেজিক স্ট্রোকঃ আমাদের মস্তিষ্কে যদি কোন রক্তনালী ছিঁড়ে যায় তাহলে তাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এই ধরনের স্ট্রোকে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটা বেশি থাকে। তাই এ ধরনের স্ট্রোক হলে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

৩। মিনি স্ট্রোকঃ আমাদের মস্তিষ্কে যখন কিছুক্ষণের জন্য রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন তাকে মিনি স্ট্রোক বলা হয়ে থাকে। এই স্ট্রোক হলে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু মিনি স্ট্রোক হচ্ছে বড় ধরনের স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ। 

মিনি স্ট্রোক হওয়ার পর প্রায় তিন মাসের মধ্যে রোগীর বড় ধরনের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মিনি স্ট্রোক কে কখনোই অবহেলা করা যাবে না। নিকটবর্তী চিকিৎসকের নিকট অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ করতে হবে।

স্ট্রোক হলে করনীয়

স্ট্রোক বলতে বোঝাই আমাদের মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে কোষগুলোর মৃত্যু হওয়া। যখন এমনটা ঘটে তখন আমরা তাকে স্ট্রোক বলে থাকি। স্ট্রোক হলে করনীয় কি সে বিষয়ে আমাদের সম্পূর্ণ ধারণা থাকা উচিত। 

একটি মানুষের স্ট্রোক হওয়ার সাথে সাথে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। লক্ষণগুলো হচ্ছে হঠাৎ শরীরের কিছু অংশ অবশ বা দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রচন্ড পরিমাণে মাথা ব্যথা শুরু হয় ও বমি হয়। হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে। কথা বলতে সমস্যা হয়। 

কথা বলার সময় কথার ভেতর জড়তা আসে বা একেবারে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়।স্ট্রোক হওয়ার সাথে সাথেই একজন ব্যক্তির এ লক্ষণগুলো প্রকাশ পাই। একজন ব্যক্তির এ লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে তিনি স্ট্রোক করেছে। একজন ব্যক্তি স্ট্রোক করলে আমাদের কি করণীয় হবে তা দেওয়া হল।
করণীয়ঃ একজন ব্যক্তির স্ট্রোকের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে সে স্ট্রোক করেছে। এক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। স্ট্রোক করা ব্যক্তিকে কিছুতেই শোয়ানো যাবে না। তাকে বসিয়ে যত বেশি সম্ভব তার মাথায় ঠান্ডা পানি দিতে হবে। 

পানি যত দেওয়া যাবে একজন স্ট্রোক ব্যক্তির জন্য ততই ভালো হবে। তারপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্ট্রোক করা ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে। কোন মতেই একজন স্ট্রোক ব্যক্তিকে নিয়ে অবহেলা করা যাবে না। কারণ সামান্য অবহেলা হতে পারে তার মৃত্যুর কারণ।

মিনি স্ট্রোক কি

আমরা অনেকেই স্ট্রোক সম্পর্কে জানি কিন্তু মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় সম্পর্কে জানিনা। মিনি স্ট্রোক হচ্ছে স্ট্রোক এর একটি অংশবিশেষ। অল্প কিছুক্ষণের জন্য যখন আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত প্রদাহ বন্ধ হয়ে রক্তের কোষ গুলো অবশ হয়ে পড়ে তখন তাকে মিনি স্ট্রোক বলে। 

এই স্ট্রোকের ফলে কয়েক ঘন্টার জন্য শরীরের কিছু অংশ অবশ হয়ে যায় কথার ভেতরে দেখা দেয়। আশেপাশের সবকিছু ঝাপসা বা অন্ধকার অন্ধকার দেখা দিতে পারে। তারপর কিছুক্ষণ এর মধ্যে আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। মিনি স্ট্রোক সাধারণত বড় ধরনের স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ বলা হয়ে থাকে।

একজন ব্যক্তির যদি মিনি স্ট্রোক হয় তাহলে সাধারণত তিন মাসের ভেতর তার বড় ধরনের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একবার মিনি স্ট্রোক হলে বড় ধরনের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই মিনি স্ট্রোক হলে সেইটা অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ এর কারণে এ ধরনের স্ট্রোক হয়ে থাকে।

মিনি স্ট্রোক কেন হয়

মস্তিষ্কের অল্প সময়ের জন্য রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বা রক্ত জমাট বেঁধে অল্প কিছুক্ষণ পরে আবার রক্ত চলাচল ঠিক হয়ে গেলে তাকে মিনিস্ট্রোক বলা হয়ে থাকে। মিনি স্ট্রোক যেহেতু স্ট্রোক এর অংশবিশেষ। সেহেতু মিনি স্ট্রোক হলে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশিত পাই। 

কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কেন মেনি স্ট্রোক হয়। মিনি স্ট্রোক হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে বয়স বৃদ্ধি পাওয়া। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে একটি মানুষের স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাছাড়াও পারিবারিক কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।
এমনও হতে পারে আপনার পরিবারের দাদা, বাবা, চাচা এর আগে স্ট্রোক করেছেন। সেহেতু পরিবারগত কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।স্ট্রোক করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। 

যে সকল ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও ডায়াবেটিস, উচ্চমাত্রার কোলেস্ট্রল, অতিরিক্ত ধূমপান ও হৃদরোগের কারণেও অনেক সময় মানুষ স্ট্রোক করে থাকে।

মিনি স্ট্রোক এর লক্ষণ

মিনি স্ট্রোক হওয়ার সাথে সাথেই একজন ব্যক্তির মাঝে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সে সকল লক্ষণগুলো দেখে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারব ব্যক্তিটি মিনি স্ট্রোক করেছে।
আসুন তাহলে জেনে নিন একজন ব্যক্তি মিনি স্ট্রোক করলে কি কি লক্ষণ দেখা দেবেঃ
  • একজন ব্যক্তি মিনি স্ট্রোক করলে শরীরের কিছু অংশ কিছুক্ষণের জন্য অবশ হয়ে পড়বে।
  • মুখের এক দিক বেঁকে যেতে পারে।
  • মিনি স্ট্রোক এর ফলে ব্যক্তিটি চারপাশ ঝাপসা বা অন্ধকার দেখবে।
  • এই সময় ব্যক্তিটি সাধারণত কাউকে চিনতে পারবে না।
  • কথা বলার সময় কথার ভেতর জরতা আসবে বা কথা বলতে পারবে না।
  • হঠাৎ করে অস্বাভাবিক আচরণ করা।
  • সাধারণত ১ ঘন্টার মধ্যেই আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

মিনি স্ট্রোক হলে করনীয়

আমাদের পরিবারের বা আমাদের প্রতিবেশীর কারো যদি স্ট্রোক হয়ে থাকে তাহলে আমরা অনেকেই আছি যারা বিভ্রান্তিতে পড়ে যায় এবং হতভম্ব হয়ে পড়ি। কি থেকে কি করব বুঝতে না পেরে অনেক কিছু করে বসি। মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় কি কি তা ও জানিনা। 

যা স্ট্রোক করা রোগীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অবশ্যই কোন ব্যক্তি স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোক করলে হতভম্ব না হয়ে স্থির ভাবে ভাবনাচিন্তা করে কাজ করতে হবে। আসুন জেনে নিন কোন ব্যক্তি যদি মিনি স্ট্রোক করে তাহলে আমাদের করণীয় কি।

করনীয়ঃ মিনি স্ট্রোক সাধারণত স্ট্রোক এর একটি অংশবিশেষ। মিনি স্ট্রোক হলে রোগী সাধারণত ১ ঘন্টা এর মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। এই স্ট্রোক হলে রোগীর তৎক্ষণাৎ বড় রকমের সমস্যা হয় না। প্রায় এক ঘন্টা পর রোগী নিজে থেকেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। 

কিন্তু অবশ্যই মনে রাখবেন মিনি স্ট্রোক হওয়া মানেই বড় স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া। তাই অবশ্যই যদি কারো মিনি স্ট্রোক হয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেওয়া উচিত। সেই পরামর্শ অনুযায়ী অবশ্যই চলা উচিত। যেন বড় রকমের স্ট্রোক না হয়।

স্ট্রোক এর প্রাথমিক চিকিৎসা

কোন ব্যক্তি স্ট্রোক করার সাথে সাথে হতভম্ব না হয়ে স্ট্রোক এর প্রাথমিক চিকিৎসা রয়েছে যার ফলে রোগীর জীবনের ঝুঁকি অনেকটা কমে যেতে পারে। রোগীর স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে তাকে কোন জায়গায় বসিয়ে দিতে হবে। 

রোগীকে অবশ্যই ফাঁকা জায়গায় বসাতে হবে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস পাই। আর তা না হলে রোগীকে বাতাস করতে হবে। রোগীর আশেপাশে ভিড় জমানো যাবে না বা কান্নাকাটি করা যাবে না। শরীরে যদি কোন টাইট পোশাক থাকে তাহলে তা ঢিলাঢালা করে দিতে হবে। 

রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে রোগীর মুখ খুলে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে রোগের মুখের ভেতরের লালা কিংবা বমি যদি থাকে তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করে দিতে হবে। রোগীকে কোনরকম স্ট্রোকের ঔষধ খাওয়ানো যাবে না। 

স্ট্রোক যেমন আলাদা হয় তেমন তাদের ঔষধ ও আলাদা হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কোনরকম ঔষধ খাওয়ানো যাবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

মিনি স্ট্রোক এর প্রতিকার

স্ট্রোক সাধারণত বংশগত কারণে হয়ে থাকে। তাছাড়াও জীবনযাত্রার বিভিন্ন রকম খারাপ অভ্যাসগুলোর কারণে স্ট্রোক হয়ে থাকে। স্ট্রোক এমন একটি ব্যাধি যার কারণে আপনার জীবনে পঙ্গুত্ব নেমে আসতে পারে কিংবা একেবারে জীবন চলে যেতে পারে। 

তাই অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে আপনি স্ট্রোক না করেন। এখন জেনে নিন কোন কোন কাজ এর মাধ্যমে জীবনে স্ট্রোকের ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারবেন। আসুন জেনে নেই মিনি স্ট্রোক এর প্রতিকার গুলো কি কি।
  • স্ট্রোকের মূল কারণ হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। তাই অবশ্যই আপনাকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • আপনার ওজন যদি বেড়ে যায় তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায় তাই নিজের ওজন সব সময় কমানোর চেষ্টা করবেন। ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম কিংবা হাঁটাচলা করতে পারেন।
  • অনেকের অভ্যাস রয়েছে অধিক মাত্রায় ধূমপান করে থাকে। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে চাইলে অবশ্যই ধূমপান করা যাবে না।
  • আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • কোন রকম খাবারের অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না। খাবারে লবণের পরিমাণ একটু কম করে খাবে।
  • অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।
  • বেশি বেশি সবুজ জাতীয় শাকসবজি খেতে হবে।

স্ট্রোক রোগীর ব্যায়াম

স্ট্রোক করার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর এক সাইড প্যারালাইসিস হয়ে যায়। প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের দেহের সেই অংশ নড়াচড়া করাতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। এজন্য চিকিৎসকগণ প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়া হাত কিংবা পায়ের জন্য বেশ কিছু ব্যায়াম করতে বলে থাকেন। যা একজন প্যারালাইসিস ব্যক্তির জন্য করা খুবই প্রয়োজনীয়। আসুন স্ট্রোক রোগীর ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নিই।

হাতের জন্য ব্যায়ামঃ স্ট্রোক করা রোগীর প্রায় বেশিরভাগ সময় এক সাইড এর কাঁধ প্যারালাইসিস হয়ে যায়। তাই রোগীর যদি কাঁধ প্যারালাইসিস হয়ে যায় তাহলে কখনোই রোগীর সেই কাঁধ ধরে উঠানো বা বসানো উচিত নয়। সব সময় সতর্ক সহকারে কাঁধে আঘাত না দিয়ে কাজ করতে হবে।

১। যদি কোন রোগীর হাত পুরোপুরি প্যারালাইসিস হয়ে যায় তাহলে প্রথম পর্যায়ে দিকে এই ব্যায়ামটি করতে হবে। একটি টেবিলের উপর একটি তোয়ালে রাখুন। তারপর তোয়ালের উপর প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়া হাত রাখুন। 

সেই হাতের আঙ্গুলের উপর ভালো হাতের আঙ্গুল রাখুন। এবার আস্তে আস্তে ভালো হাত ব্যবহার করে দুই হাত সামনের দিকে নিয়ে যান আবার পেছনের দিকে নিয়ে আসুন। বেশ কিছুক্ষণ এই ব্যায়ামটি করতে হবে।

২। এবার একটি টেবিলের উপরে একটি তোয়ালে রাখুন। তোয়ালের ওপর প্যারালাইসিস হাত রাখুন। তার ওপর ভালো হাত রেখে ভালো হাতের শক্তি দিয়ে প্যারালাইসিস হাত সামনে, পেছনে এবং ডানে,বামে এবং দুটি গোল গোল করে ঘুরাতে হবে। এতে করে আপনার প্যারালাইসিস হাতের উপর প্রেশার পড়বে। যা আপনার হাতের জন্য খুবই উপকারী।

৩। একটি লাঠি দুই হাত দিয়ে ধরতে হবে। কারো সাহায্য নিতে পারেন লাঠিটি বুক এর বরাবর ধরতে হবে। এবার আপনার হাত একবার ডান সাইডে একবার বাম সাইডে নিয়ে যেতে হবে। এতে করে আপনার প্যারালাইসিস হাতের ওপর চাপ পড়বে।

মিনি স্ট্রোক হলে করনীয়ঃ শেষ কথা

আমাদের দেশের স্ট্রোক এই ব্যাধিটি প্রায় কম বেশি সব পরিবারেই হয়ে থাকে। তাই পরিবারের কোন সদস্যর যদি স্ট্রোক হয় তাহলে হতভম্ব না হয়ে শান্ত ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করতে হবে। তা না হলে রোগীর মৃত্যু ও হতে পারে। 

আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জানতে পেরেছেন মিনি স্ট্রোক কি - মিনি স্ট্রোক এর লক্ষণ কি । কি কি লক্ষণ দেখলে বুঝতে পারবেন ব্যক্তিটি স্ট্রোক করেছে। আমার লেখা মিনি স্ট্রোক হলে করনীয় আর্টিকেলটি পড়ে যদি একটি ব্যক্তি ও উপকৃত হয় তাহলে সেটি হবে আমার জন্য বড় পাওয়া। 

আশা করছি ভবিষ্যতে এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য আপনাদের জানাতে পারব। আর এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে নিয়মিত আমার লিখা আর্টিকেল পড়ুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url