অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩
আপনি কি অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে কিছুই জানেন না। যদি এমনটা
হয় তাহলে আমার লেখা অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এ আর্টিকেলটি পড়ুন। এই
আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত ভাবে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
আলোচনা করেছি।
আশা করছি আমার লেখা অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি
আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য খুঁজে পাবেন। অনলাইনে কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন
তা জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার
আমাদের জীবনযাত্রায় বিভিন্ন রকম কাজে ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়।
অর্থ সঞ্চয় এর ক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্ট এর ভূমিকা অনেক বেশি। অল্প অল্প করে অর্থ
সঞ্চয় কিংবা একসাথে অনেক অর্থ সঞ্চয় এর ক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্ট এর তুলনা হয়
না। ব্যাংক একাউন্টে অর্থ সঞ্চয় করা এটি সাধারণ মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়।
আপনাদের সামনে আমি এখন তুলে ধরবো ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার। ব্যাংক একাউন্ট
বিভিন্ন রকমের দেখা যায় কিন্তু ব্যাংক একাউন্ট সাধারণত চার প্রকার।
- চলতি একাউন্ট (Current Account)
- সঞ্চয় একাউন্ট (Saving Account)
- পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট একাউন্ট (Recurring deposit Account)
- ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট (Fixed deposit Account)
চলতি একাউন্ট (Current Account) এই একাউন্ট যে কোন ব্যক্তি নিজের
নামে খুলতে পারেন। তাছাড়াও সাধারণ ব্যবসায়ী ব্যক্তি, কোম্পানি এবং যেকোনো
প্রতিষ্ঠানের মালিক এই একাউন্ট খুলতে পারে। এই একাউন্ট দীর্ঘদিনের সঞ্চয়ের
উদ্দেশ্যে খোলা হয় না। এ ধরনের একাউন্ট নির্দিষ্ট লেনদেনের কোন সীমা থাকে
না। এই একাউন্টে অর্থের ওপরে কোন রকম সুদ প্রদান করা হয় না। ব্যাংকসমূহ এ সকল
একাউন্টে পরিষেবা চার্জ ধার্য করে। এ সকল একাউন্ট এর কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ
থাকেনা। এ সকল একাউন্ট এ আপনি যখন খুশি অর্থ জমা করতে পারবেন আবার যখন খুশি
অর্থ উঠিয়ে নিতে পারবেন।
সঞ্চয় একাউন্ট (Saving Account) এ ধরনের একাউন্ট ভবিষ্যতের জন্য অর্থ
সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোন ব্যক্তি একক ভাবে কিংবা যৌথভাবে
এই সঞ্চয় একাউন্ট খুলতে পারেন।সঞ্চয় একাউন্ট সাধারণত বেতনভোগী ব্যক্তি এবং
পেনশনকারী ব্যাক্তি ব্যাবহার করে থাকে। এ ধরনের ব্যাংক একাউন্ট খোলার পর ব্যাংক
কর্তৃক কিছু পরিমাণ সুদ প্রদান করে থাকে। সেই সুদের হার দৈনিক কিংবা সাপ্তাহিক
অথবা মাসিক ও বার্ষিক ভিত্তিতে প্রদান করে থাকে। সঞ্চয় একাউন্ট খোলার পর এই
একাউন্ট থেকে প্রয়োজনমতো অর্থ উঠিয়ে নিতে পারা যায়। সঞ্চয় একাউন্ট এর সুদের
হার ৪% অথবা ৬% হয়ে থাকে। সঞ্চয়ের একাউন্টে সাধারণত চেক প্রদানের সুবিধা দেওয়া
থাকে।
পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট একাউন্ট (Recurring deposit Account) পুনর্নবীকরণ
ডিপোজিট একাউন্ট নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য উচ্চ সুদের হার অর্জনের লক্ষ্যে এই
একাউন্ট খোলা হয়ে থাকে। এ ধরনের একাউন্টে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ একটি
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতি মাসে জমা রাখতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের শেষে এই অর্থ
সুদ সহ ব্যাংক কর্তৃক প্রদান করে থাকে। এ ধরনের একাউন্ট এর মেয়াদকাল সর্বনিম্ন ৬
মাস এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর হয়ে থাকে। সময়কাল এর ওপর ভিত্তি করে ব্যাংকগুলো সুদ
প্রদান করে থাকে।
ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট (Fixed deposit Account) এ ধরনের
একাউন্ট একটি নির্দিষ্ট সময় এর জন্য খোলা হয়ে থাকে। সেই নির্দিষ্ট সময়ের
পূর্বে এই একাউন্ট থেকে অর্থ তোলা যায় না। তবে যদি খুব প্রয়োজন হয় তাহলে
আমানতকারী ব্যাংকের পেনাল্টি পরিশোধ করার পর নির্দিষ্ট পরিমাণ আমানত বন্ধ করার
জন্য ব্যাংক কর্তৃক এর কাছে অনুরোধ করতে পারেন। এই একাউন্ট এ উচ্চ সুদ প্রদান করা
হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট আমানতের উপর ভিত্তি করে সুদের হার পরিমাণ ও সময়সীমার এবং
এক ব্যাংক হতে অন্য ব্যাংক পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
অনলাইনে হোক কিংবা সরাসরি ব্যাংক একাউন্ট খোলার আগেই আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে সে সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানা। তারপর যদি অনলাইনে
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চান তাহলে অবশ্যই অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট খুলতে গিয়ে বিরক্তিকর পরিবেশের
সম্মুখীন হতে না চাইলে প্রথমে আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজ লাগে
সেগুলো সংগ্রহ করে তারপর ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে গেলে যে সকল তথ্য এবং কাগজপত্র দরকার সে সম্পর্কে আমি
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলাম।
- যার নামে ব্যাংক একাউন্ট খোলা হবে তার তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন।
- যে ব্যক্তির নামে ব্যাংক একাউন্ট খোলা হবে তার ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে যেতে হবে।
- অবশ্যই সে ব্যক্তিকে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে।
- কিছু কিছু ব্যাংক একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুৎ এর কাগজ চেয়ে থাকে তাই অবশ্যই সাথে করে বাসার পল্লী বিদ্যুৎ এর কাগজ নিয়ে যাবেন।
- একজন নোমিনীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি প্রয়োজন হয়।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে
ব্যাংক একাউন্ট খোলার আগে অবশ্যই আপনাকে জেনে নিতে হবে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত
টাকা লাগবে। যদি আপনি পূর্ব থেকে জেনে থাকেন ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা
লাগে তাহলে তা আপনার জন্য অনেক সুবিধা হবে। তাই আপনার যদি কোন ব্যাংকে একাউন্ট
খুলতে চান তাহলে অবশ্যই আগে থেকে কোন একাউন্ট খুলতে কত খরচ হবে এটি জেনে রাখার
চেষ্টা করুন।
- যে কোন ব্যাংকে সঞ্চয়ী একাউন্ট খুলতে ৫০০ টাকা প্রয়োজন হয়।
- যদি আপনি চলতি একাউন্ট খুলতে চান তাহলে সাধারণত ১০০০ টাকা দরকার হয়ে থাকে।
- আপনি যদি সঞ্চয়ী একাউন্ট বন্ধ করতে চান তাহলে ২০০ টাকা মতো খরচ হয়।
- কেউ যদি চলতি একাউন্ট বন্ধ করতে চাই তাহলে ৩০০ টাকা খরচ হয়।
অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
আমরা অনেকেই আছি যারা ব্যাংকে গিয়ে বিভিন্ন রকম ঝামেলার সম্মুখীন না হয়ে ঘরে
বসে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তারা চাই ঝামেলা
মুক্তভাবে ঘরে বসে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে। কিন্তু অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট
খুলতে চাইলে অবশ্যই প্রথমে আপনাকে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
খুব ভালোভাবে জানতে হবে।
তাছাড়া সকল তথ্য নির্ভুল ভাবে প্রদান করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীতে আপনার জন্য
এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই অবশ্যই অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাইলে
আপনাকে অধিক সচেতন হতে হবে। কিছু কিছু নিয়ম আছে যে সকল নিয়ম মেনে আপনি খুব
সহজেই অ নলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন। আমাদের দেশে এমন অনেক ব্যাংক রয়েছে
যেগুলোতে আপনি অনলাইনে একাউন্ট খুলতে পারেন।
একেক ব্যাংকের অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার একেক রকম কিছু নিয়ম রয়েছে।
প্রতিওটি ব্যাংকের নিজস্ব কিছু অ্যাপ রয়েছে যে সকল অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি খুব
সহজেই অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন এবং অর্থ লেনদেন করতে পারবেন। অ্যাপ
গুলো ব্যবহারের কিছু নিয়ম রয়েছে সে সকল নিয়ম মেনে আপনি অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট
খুলতে পারবেন।
অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায় এমন কিছু ব্যাংক এর নামের তালিকা নিচে
দেওয়া হলঃ
- ডাচ বাংলা ব্যাংক
- ইসলামিক ব্যাংক
- সোনালী ব্যাংক
- সিটি ব্যাংক
- ন্যাশনাল ব্যাংক
- ঢাকা ব্যাংক
- প্রাইম ব্যাংক
- সাউথ ইস্ট ব্যাংক
- ইউ সি বি ব্যাংক
উপর উল্লেখিত ব্যাংকগুলোতে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে
পারবেন। নিচে আপনাদের সুবিধার জন্য একটি ব্যাংকের অনলাইনে একাউন্ট খোলার নিয়ম
সম্পর্কে আলোচনা করলাম। যাতে করে আপনারা ধারণা পেতে পারেন অনলাইনে কিভাবে ব্যাংক
একাউন্ট খোলা যায়।
অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
অনলাইনের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে
সোনালী ব্যাংকের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। সোনালী ব্যাংকে অনলাইনে একাউন্ট খুলতে
হলে প্রথমে আপনাকে Sonali e-Sheba অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। কারণ সোনালী ব্যাংকে
অনলাইন একাউন্ট এই অ্যাপ হতে খোলা যায়।Sonali e-Sheba অ্যাপের সাহায্যে
একাউন্ট খোলা হলেও ব্যাংকিং ব্যবহার করার জন্য Sonali e-Wallet অ্যাপ
ব্যবহার করতে হয়। অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলা হলেও সকল ধরনের পেপারস
ব্যাংকে গিয়ে সাবমিট করতে হয়।
শেষ কথা
আশা করছি আমার লেখা অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি
খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ঘরে বসে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন। আমি
আপনাদের সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনি অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার
নিয়ম এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে আমার লেখা
স্বার্থক হবে। এরকম আরো তথ্য পেতে নিয়মিত আমার লেখা আর্টিকেল গুলো পড়ুন। আমি
আমার আর্টিকেলে এরকম আরো প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে আপনাদের সেবা দানের চেষ্টা
করব।
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url